তীব্র তাপপ্রবাহের পর অবশেষে বৃষ্টির দেখা পেয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষ।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সকাল হতেই তা বেশ জোরেই ঝরতে শুরু করে। বহুল কাঙ্ক্ষিত এই বৃষ্টি দুই নগরে এনেছে স্বস্তি। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ প্রকাশ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃষ্টির ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
কক্সবাজারের আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারি আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন জানান, “মূলত বৃষ্টি হয়েছে সকাল ৯ টার পর থেকে। বেলা ১২ টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।”
আগামী আরও ২-৩ দিন কক্সবাজারে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে দিনভর চলেছে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি। ভোরে শুরু হওয়া হালকা বৃষ্টি সকাল হতেই বেশ জোরে নেমেছে। ফলে অফিসযাত্রীদের প্রায় সবাইকেই ছাতা মাথায় বের হতে হয়েছে।
অবশ্য কিছুক্ষণ পরই আবার প্রখর রোদের দেখা মেলে। যদিও সেটা বেশি সময়ের জন্য নয়। তারপর আবার নেমেছে বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড বেগের বাতাস আর বজ্রপাত।
সব মিলিয়ে দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই কমেছে। বুধবার যেখানে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির পর তা কমে দাঁড়ায় ৩৪ ডিগ্রিতে।
অবশ্য আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত তাপমাত্রা কমলেও এর ধারাবাহিকতা থাকবে না। তবে আগামী দুদিন চট্টগ্রামে এই ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল বারেক বলেন, “বৃহস্পতিবার যে বৃষ্টি হয়েছে সেটিকে আমরা মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত বলছি না। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হতে মাসখানেক সময় লাগবে।”
চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার যে দুই দফা বৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে ভোররাত ৩টার দিকে ১ মিলিমিটার এবং ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৭ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে আবারও ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানান তিনি।
মে মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাভাবিকভাবেই এমন বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও কয়েক দফায় তাপপ্রবাহের আভাসও আছে। এর সঙ্গে রয়েছে কালবৈশাখী ঝড়, এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসও।
অধিদপ্তরের একমাস মেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, এপ্রিলে দেশে স্বাভাবিকের তুলনায় ৮১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে মে মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
কয়েক দফায় কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস দিয়ে এতে আরও বলা হয়েছে, এই মাসে দেশে ৩-৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় এবং ২-৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি অথবা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
এছাড়া চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সৃষ্ট লঘুচাপের মধ্যে একটি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সকাল সন্ধ্যার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক প্রতিবেদক)