Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

কাচিনে ৪ শহরসহ ৮০টির বেশি ঘাঁটি কেআইএর দখলে

সিন খান সেতুতে কেআইএ সেনারা।
সিন খান সেতুতে কেআইএ সেনারা।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশের চার শহরসহ ৮০টি সেনা ঘাঁটি দখলে নেওয়ার দাবি করেছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ)।

দুই মাস আগে মিয়ানমারের উত্তরে জান্তার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছিল কেআইএ ও পিডিএফ (পিপলস ডিফেন্স ফোর্স) জোট। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই এই সাফল্য অর্জন করেছে তারা।

জাতিগত বিদ্রোহী সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স অর্গানাইজেশনের (কেআইও) সশস্ত্র শাখা কেআইএ ও তাদের মিত্র বাহিনীরা গত ৭ মার্চ ভামো-মিটকিনা রোড বরাবর জান্তা সেনাদের অবস্থানে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।

এরপর থেকে তারা মোমাউক, ওয়াইংমাও ও মাইটকিনা শহর এলাকা এবং ভামোর উত্তরে অবস্থিত মানসি, সুমপ্রাবুম ও তানাই শহর এলাকাগুলোতে রাস্তার পাশে অবস্থিত কমপক্ষে ১১টি ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তরসহ ৮০টিরও বেশি ফাঁড়ি ও ঘাঁটি দখল করেছে। তাদের দখল করা চারটি শহর হল ডথপোনিয়ান, লুয়েগেল, সিনবো ও সুমপ্রাবুম।

কেইআইএর দখল করা চার শহরের মধ্যে প্রথম তাদের দখলে আসে মোমাউক শহর এলাকার উপ-শহর ডোথপনিয়ান। জান্তার বিরুদ্ধে হামলা শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যেই কেআইএ ও মিত্রবাহিনী শহরটির দখল নেয়। এসময় তারা জান্তার ১৪২ ও ২৩৭ পদাতিক ব্যাটালিয়নের সদরদপ্তরসহ শহরের ভেতরের ও আশেপাশের সামরিক ঘাঁটিগুলোও দখল করে।

পিডিএফ, আরাকান আর্মি (এএ) ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীসহ কেআইএ ও এর সহযোগীরা ২৮ মার্চ মোমাউক শহর এলাকার লুগেল শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। শহরটি মিয়ানমার-চীন সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। শহরটির চারপাশের সমস্ত ফাঁড়িও তাদের দখলে চলে যায়।

কেআইএ ও মিত্রবাহিনীর হাতে পতন ঘটা তৃতীয় শহর হল সিনবো। ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ১৪১ এর সদরদপ্তর দখল করার পর শহরটি কেআইএর নিয়ন্ত্রণে আসে। ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ১৪১ ছিল সেখানকার সর্বশেষ জান্তা ঘাঁটি।

গত রবিবার ও সোমবার কেআইএ ও মিত্র বাহিনী ১৩টি জান্তা সামরিক ফাঁড়ি দখল করার পরে সুমপ্রাবুম শহরটির নিয়ন্ত্রণও তাদের হাতে আসে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পাহাড়ি ঘাঁটি রয়েছে, যার পরিচালনায় ছিল ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৪৬।

কেআইএ মুখপাত্র কর্নেল নাও বু বলেছেন, “আমরা সেই কৌশলগত পাহাড়ের চূড়াটি দখল করতে সক্ষম হয়েছি, যেখানে জান্তার কার্যালয় রয়েছে। এতে আমরা সুমপ্রাবুম শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছি।”

একজন রাজনৈতিক ও সংঘাত বিশ্লেষক বলেছেন, সুমপ্রাবুম শহর দখল করার মাধ্যমে বিদ্রোহীরা মাইটকিনা ও পুতাওর মধ্যে জান্তার সামরিক সরবরাহ পথ কেটে দিতে সক্ষম হয়েছে। এতে কেআইএর পুতাও শহরটি দখলের সম্ভাবনাও বেড়ে গেছে।

সোমবার ওয়াইংমাও শহর এলাকার পাহাড় চূড়ায় জান্তার গিডন ফাঁড়িটিও দখল করে নিয়েছে তারা।

পাহাড় চূড়ার এই ফাঁড়িটি মূলত একটি কেআইএর একটি ঘাঁটি ছিল, যেটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দখল করে নেয়। কেআইএর মতে, এটি মাইটকিনা-ভামো রোডে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থানে অবস্থিত।

সম্মিলিত কাচিন প্রতিরোধ বাহিনী জান্তার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখন ভামো শহরাঞ্চলে আক্রমণ শুরু করেছে। সেখানে জান্তার সামরিক অপারেশন কমান্ড-২১ অবস্থিত।

মঙ্গলবার কেআইএ ও তাদের সহযোগীরা সিন খান গ্রামের চারপাশে এবং ইরাবতী নদীর উপর সিন খান ব্রিজের কাছে তিনটি জান্তা সামরিক ফাঁড়ি দখল করে।

একই দিন তারা ওয়াইংমাও, মোমাউক ও মানসি শহরে জান্তার সমর্থক মিলিশিয়া গ্রুপগুলোর ঘাঁটি এবং অন্যান্য জান্তা সামরিক ও পুলিশ ফাঁড়িগুলোও দখল করে।

গত বছরের ২১শে নভেম্বর কেআইএ মাইটকিনা জেলার চীন সীমান্তের কাছের শহর ইনজানিয়াংও দখল করেছিল। জান্তার বাহিনী কোনও যুদ্ধ ছাড়াই শহরটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

৭ মার্চ থেকে সম্মিলিত হামলা শুরু করার পর দখল করা শহরগুলোসহ কেআইএ ও মিত্রবাহিনী কাচিন রাজ্যের মোট পাঁচটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত