Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

তীব্র গরমে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, হিটস্ট্রোক এড়াতে নানা পরামর্শ

এই গরমে বাড়ির বাইরে বের হতে হলে ছাতা মাথায় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিডিডিআরবি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
এই গরমে বাড়ির বাইরে বের হতে হলে ছাতা মাথায় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিডিডিআরবি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

দেশে চলছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে দুর্বিসহ হয়ে উঠছে মানুষের জীবন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ, ঘরের বাইরে না বেরিয়ে উপায় নেই যাদের।

গরম তীব্র হলেই দেশে বেড়ে যায় জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়াসহ হিটস্ট্রোকের মতো রোগ। এবারও হাসপাতালগুলোয় এসব লক্ষণ নিয়ে ভিড় করছে মানুষ। চিকিৎসকরাও বলছেন শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে।

বুধবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি ছিল, তবে গরমের অনুভূতি ছিল ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য তার তাপ ছড়িয়ে গেছে সমানতালে।

এর আগে সোমবার চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৮১ সাল থেকে অর্থাৎ সবশেষ ৪৩ বছরের মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই গরম পুরো মাস জুড়েই বিরাজ করবে।

বাংলা নববর্ষের এবারের প্রথম দিনটি ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্তপ্ত। সেদিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয় রাঙ্গামাটিতে। গতবছরের একই দিনে ৪১ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল চুয়াডাঙ্গায়।

দিনে দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই পরিক্রমায় বাড়ছে নানা ধরনের রোগ-বালাই। বিশেষ করে হিটস্ট্রোক হলে তা সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে।  

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এ সময়টা খুবই শঙ্কার। হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়ার পাশাপাশি চর্মরোগ, খিঁচুনি, ক্লান্তিবোধ, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।

এরই মধ্যে গত ৩ এপ্রিল মাদারীপুরের কালকিনিতে তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকে শুক্কুর আলী নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সবারই হিটস্ট্রোক হতে পারে। তবে শ্রমজীবী মানুষ যেমন- পোশাক কারখানার শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচলকসহ যারা খোলা ও বদ্ধ জায়গায় কাজ করেন, তাদের এ শঙ্কা বেশি।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করেছে।

সেখানে বলা হয়, কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললেই হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তাপ প্রবাহের সময় ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। আর এ সময় সুস্থতার নিশ্চিতে তারা দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর যদি বের হতেই হয়, তাহলে রোদ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

আইসিডিডিআরবি বলছে, বাড়ির বাইরে বের হলে ছাতা, টুপি-ক্যাপ বা কাপড় দিয়ে যথাসম্ভব মাথা ঢেকে রাখতে হবে। হালকা রঙের, ঢিলেঢালা এবং সম্ভব হলে সুতির পোশাক পরতে হবে

প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে, এমন সব খাবার খেতে হবে যা সহজে হজম হয়। বাসি ও খোলা খাবার খাওয়া উচিত হবে না।

একটানা পরিশ্রম হয় এমন কাজ দিনের বেলায় না করতে পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বলা হয়েছে, সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিতে হবে বা গোসল করতে হবে।

প্রত্যেককে তাদের প্রস্রাবের রঙের দিকে খেয়াল রাখতে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, রঙ হলুদ বা গাঢ় হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

এছাড়া ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয়ে ওঠে সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেছে আইসিডিডিআরবি। অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।

ঝুঁকিতে যারা

আইসিডিডিআরবি বলছে, এসময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীরা। পাশাপাশি শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন রিকশাচাল, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক তারাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।

এছাড়া যাদের ওজন বেশি এবং যারা শারীরিকভাবে আগে থেকেই অসুস্থ, বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারাও গরমের নানা রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত