Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ অতিরিক্ত মোটা

ছবি : বিবিসি
ছবি : বিবিসি
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ বাস করছে স্থূলতা নিয়ে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

গবেষণায় প্রাপ্ত ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, স্থূলতায় ভোগা এসব মানুষের মধ্যে শিশু রয়েছে প্রায় ১৬ কোটি, প্রাপ্তবয়স্ক ৮৮ কোটি।

১৯৯০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চলা ওই গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি মোটা হচ্ছে শিশুরা এবং নারীদের তুলনায় পুরুষরা মোটা হচ্ছেন বেশি। বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অন্যদিকে পুরুষদের বেড়েছে প্রায় তিনগুণ এবং শিশু, কিশোর-কিশোরীদের বৃদ্ধির হার চারগুণ।

বিশ্বে এখন মানুষের সংখ্যা ৮০০ কোটির মতো, সেক্ষেত্রে আট ভাগের এক ভাগ মানুষ স্থূলতায় ভুগছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল সম্মিলিতভাবে এই গবেষণাটি চালিয়েছেন দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে। সেখানে দেখা যায়, প্রায় ১৯০টি দেশের বয়স্ক নারীদের মধ্যে স্থূলতার শীর্ষে রয়েছে ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশ টোঙ্গা ও আমেরিকান সামোয়া। সেখানে নারীর ৮১ শতাংশই স্থূলতায় আক্রান্ত। অন্যদিকে পুরুষদের স্থূলতার শীর্ষে রয়েছে ওশেনিয়ার দেশ আমেরিকান সামোয়াসহ নাউরু। এই দুই দেশেরই ৭০ শতাংশ পুরুষ স্থূলাকার।

ওই তালিকায় যুক্তরাজ্য রয়েছে ৫৫ (পুরুষ) ও ৮৭তম (নারী) স্থানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থূলাকার পুরুষদের তালিকায় ১০ম এবং নারীদের তালিকায় ৩৬তম অবস্থানে রয়েছে।

দিনকেদিন অস্বাভাবিকহারে স্থূলতা বেড়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক দল বিবিসিকে জানায়, স্থূলতা মোকাবেলায় জরুরি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কারণ, হৃদরোগ, টাইপ-টু ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ আরও অনেক রোগের কারণ হতে পারে স্থূলতা।

বেশি ওজনের ব্যক্তিদের সাথে সাথে কম ওজনের তালিকাও করা হয়েছে ওই গবেষণায়। সেখানে দেখা যায়, কম ওজনের তালিকায় ভারতের নারীরা ১৯তম এবং পুরুষরা রয়েছেন ২১ তম স্থানে। এদিকে কমিউনিস্ট দেশ চীন এই তালিকায় রয়েছে ১১তম (নারী) ও ৫২তম (পুরুষ) স্থানে।

তবে স্থূলতার তালিকায় বেশিরভাগই রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রের নাম। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সিনিয়র গবেষক অধ্যাপক মজিদ ইজ্জাতি বিবিসিকে বলেন, দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রাপ্যতার ওপর স্থূলতার এই বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করছে।

তিনি জানান, এসব অঞ্চলে স্বাস্থ্যকর খাবারের তুলনায় অস্বাস্থ্যকর খাবার দামে কম ও সহজে পাওয়া যায়। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর প্রচারণা আকর্ষণীয় হওয়ায় মানুষ এসব খেতেই ঝুঁকছে বেশি।

প্রফেসর ইজ্জাতি বছরের পর বছর ধরেই এসব তথ্যে নজর রাখছেন। বৈশ্বিক স্থূলতার চিত্র পরিবর্তনের গতি দেখে তিনি রীতিমত বিস্মিত। তিনি বিবিসিকে জানান, যেসব দেশগুলোয় ওজন কম হওয়াকে উদ্বেগ হিসেবে দেখা হত সেসব দেশে আশংকাজনক হারে বাড়ছে স্থূলতা।

গবেষণা চলাকালীন ওই ৩২ বছরে, প্রাপ্তবয়স্ক কম ওজনের ব্যক্তিদের সংখ্যা কমেছে অর্ধেক। তবে গবেষকরা জোর দিয়ে বলছেন, ওজন কম হওয়ার বিষয়টি এখনও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বড় সমস্যা।

দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণাটির সহ-লেখক, মাদ্রাজ ডায়াবেটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. গুহ প্রদীপা বলছেন, স্থূলতা কিংবা কম ওজন দু’ই অপুষ্টির কারণ হতে পারে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ মহামারী দ্বারা সৃষ্ট ব্যাঘাত ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয়গুলোর প্রভাব পড়ছে স্থূলতা কিংবা কম ওজনের ওপর। কারণ এগুলোর কারণে দারিদ্রতা বাড়ার সাথে সাথে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের সহজপ্রাপ্যতা কমিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত