জাতীয় দল ছেড়ে ক্লাব ফুটবলের কোচ হিসেবে শুরুটা রাঙিয়ে নিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন। শুধু তাই নয়, শনিবার নারী ফুটবল লিগে ছোটন মুখোমুখি হয়েছিলেন ছোট ভাই গোলাম রায়হান বাপনের।
কোচ হিসেবে ডাগ আউটের এক দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নারী দলের দায়িত্বে ছিলেন ছোটন। অন্য দিকে আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ গোলাম রায়হান বাপন। দুই সহোদরের লড়াইয়ে জিতেছেন ছোটন।
লিগের প্রথম ম্যাচে সেনাবাহিনী দল ১-০ গোলে হারিয়েছে আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবকে। ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেছেন মোসাম্মৎ সুলতানা।
একে তো আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবে খেলেন জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের একাধিক অভিজ্ঞ ফুটবলার। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে তহুরা খাতুনের গোল অসংখ্য। মাত্রই গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফে সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন মোসাম্মত সাগরিকা। গত নারী লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা আকলিমা খাতুন, ইতি খাতুন, আফঈদা খন্দকার, অর্পিতা বিশ্বাসদের মতো জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের নিয়েও জিততে পারেনি আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব।
এমন একটা ম্যাচ জয়ের পর উচ্ছ্বসিত গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, “ মেয়েরা আজ আমার পরিকল্পনা অনুসারে খেলতে পেরেছে। কেননা এটা আমাদের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ। জানতাম ওরা আক্রমণ করবে। এরপর আমরা বল রিগেইন করব। প্রান্তি ও সুরমা জাতীয় দলের ডিফেন্ডার। কিন্তু ওদের কাটিয়ে গোল করা কঠিন ছিল। সেটা করতে পেরেছে সুলতানা।”
ক্লাব ফুটবলে কাজ করার অভিজ্ঞতাটাও বেশ ভালোই বলে মনে হয়েছে ছোটনের। নতুন এই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে আরও সাফল্য পেতে চান সাফজয়ী কোচ, “যেহেতু এতদিন জাতীয় দল নিয়ে কাজ করে এসেছি। কাজ করেছি দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল নিয়ে। কিন্তু এখন গিয়ে নতুন একটা দল পেলাম। যেটা তরুণদের নিয়ে গড়া। জাতীয় দলের বিপক্ষে খেলাটা বিরাট চ্যালেঞ্জিং ছিল আমাদের। এখানে হার জিত মুখ্য ছিল না। লক্ষ্য ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ফুটবল উপহার দেওয়া। এটা পেশাদার দল। পেশাদারিত্ব থাকবে ও ভালো ফুটবল উপহার দিবে। মেয়েরা সেটা বুঝতে পেরেছে।”
আতাউর রহমান ভূঁইয়ার মতো শক্তিশালী দলকে হারানোয় মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বললেন গোলাম রব্বানী ছোটন, “ আমাদের জন্য ভালো ব্যাপার হলো প্রথম ম্যাচেই একটা শক্তিশালী দলকে হারিয়েছে মেয়েরা। এটা একটা ভালো দিক। এটা নতুন দল। এই জয়ে ওদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।”
ফুটবল মাঠে সহোদরকে হারানোর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? প্রশ্নটা করতেই হেসে উত্তর দিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন, “সে অনেক দিন ফুটবল কোচিং করাচ্ছে। অনেক সাফল্য আছে। ওর একাডেমিতে অনেক ফুটবলার। অনেক অভিজ্ঞতা ওর। তাছাড়া আমার চ্যালেঞ্জ ছিল দুর্বল দল নিয়ে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলা এবং জেতা। খেলার মাঠের বাইরে সে আমার ভাই। কিন্তু খেলার মধ্যে আমি ভুলে গেছি সে ভাই না কে। সেটা মনেও ছিল না। আমি আমার টিম নিয়ে ফোকাসড ছিলাম। ম্যাচ শেষে তাকে ওয়েলডান বলে চলে এসেছি। সেও আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।”
ছোটন এক দশক বাংলাদেশ সিনিয়র ও বয়স ভিত্তিক নারী দলের কোচ ছিলেন।
ছোটনের ছোট ভাই গোলাম রব্বানী বাপনও ফুটবল কোচ। তিনি আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবে গত লিগেও কোচিং করিয়ে রানার্স আপ করিয়েছেন। নিজ জেলা টাঙ্গাইলে বিভিন্ন স্কুল ও জেলা পর্যায়ে নানা টুর্নামেন্টে তার সাফল্য রয়েছে। ছোটনের ভাই মূলত তৃণমূলে কাজ করতেই অভ্যস্ত।