Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

রুদ্ধশ্বাস এল ক্লাসিকোয় নাটকীয় জয় রিয়ালের

ইনজুরি টাইমে গোল করে রিয়ালকে নাটকীয় জয় এনে দিয়েছেন জুড বেলিংহাম। ছবি : এক্স
ইনজুরি টাইমে গোল করে রিয়ালকে নাটকীয় জয় এনে দিয়েছেন জুড বেলিংহাম। ছবি : এক্স
Picture of ক্রীড়া ডেস্ক

ক্রীড়া ডেস্ক

রিয়াল ৩ : বার্সেলোনা ২

এল ক্লাসিকো মানেই উত্তেজনা-নাটক-বিতর্ক আর বারুদে ঠাসা প্যাকেজ। রবিবার রাতে ব্যতিক্রম হয়নি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেও। শুরুতে বার্সা গোল করে স্তব্ধ করে দেয় গ্যালারি। রিয়াল দ্রুতই সমতা এনে ফেরায় উৎসবের ঢেউ। বিরতির পর আবারও এগিয়ে যায় বার্সা। হারার আগে হার না মানা রিয়াল এবারও সমতা ফেরায় চার মিনিট না যেতে। এরপর ইনজুরি টাইমে জয়সূচক গোল!

এভাবে এগিয়ে যাওয়া-ফিরে আসা যেমন উপভোগ্য ছিল। তেমনি বিতর্কও হয়েছে পেনাল্টি দেওয়া না দেওয়ায়। তেমনি গোললাইন টেকনোলজি না থাকায় বার্সার গোল না পাওয়ার বিতর্ক ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ রেফারির ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘‘রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় তিনি।’’

গোল নাকি গোল নয়? বিতর্ক চলছে এ নিয়ে। ছবি : এক্স

উপভোগ্য আর উত্তেজনার ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের নাটকীয় জয় পেয়েছে রিয়াল।  বার্সার হয়ে দুই গোল আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও ফেরমিন লোপেজের। পিছিয়ে পড়েও দুবার রিয়ালের হয়ে সমতা ফেরান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও লুকাস ভাসকেস। আর ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে গোল করে জয় এনে দেন জুড বেলিংহাম।

এই জয়ে বার্সার চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে গেল রিয়াল। তাতে লা লিগা জয়টা সময়ের অপেক্ষা এখন।

এই মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে লা লিগায় হারেনি বার্সেলোনা। রিয়াল মাদ্রিদও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হারেনি লা লিগায়। মৌসুমেরে শেষ এল ক্লাসিকোয় বদলে গেল ভাগ্যটা।

বার্সেলোনা এগিয়ে গিয়েছিল ষষ্ঠ মিনিটে। ম্যাচের প্রথম কর্নারটা নেন রাফিনিয়া। তার বাঁকানো কর্নারে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন হাত ছোঁয়াতে পারেননি। পেছনে থাকা আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের হেড জড়ায় জালে। স্তব্ধ হয়ে যায় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর গ্যালারি। নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ক্রিস্টেনসেন ছিলেন না চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির বিপক্ষে। তৃতীয় ডেনিস খেলোয়াড় হিসেবে এল ক্লাসিকোয় গোল করলেন তিনি।

শুরুতে গোল হজম করে মরিয়া হয়ে উঠে রিয়াল। প্রথম ১৫ মিনিটে তাদের বলের দখল ছিল ৭০ শতাংশ। ধারাভাষ্যকাররা বলছিলেন রিয়ালের সমতায় ফেরা সময়ের অপেক্ষা। সেই সময়টা আসে ১৮তম মিনিটে। পেনাল্টি থেকে গোল করে ১-১ সমতা ফেরান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

পাও কুবারসি ডি বক্সে লুকাস ভাসকেসকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। ভিনিসিয়ুসের ডান দিকে নেওয়া শটে গোলরক্ষক টের স্টেগেনও ঝাঁপিয়েছিলেন সঠিক দিকে। কিন্তু শটের পাওয়ারের জন্য কিছু করার ছিল না তার। এবারের লিগে এটা ভিনিসিয়ুসের ১৩তম গোল।

এর আগে কখনও লা লিগায় পেনাল্টি নেননি ভিনিসিয়ুস। ১৭২তম ম্যাচে প্রথম স্পট কিক থেকে গোল করলেন এই ব্রাজিলিয়ান। ২০০৮ সালে স্যামুয়েল ইতোর মিসের পর এল ক্লাসিকোয় হওয়া ১৭টি পেনাল্টির সবগুলো জড়িয়েছে জালে।

২৮ মিনিটে বার্সার কর্নার থেকে লামিনে ইয়ামালের ব্যাকহিল লুনিন ঠেকালেও  ক্যামেরার বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলটি পুরোপুরি গোললাইন পেরিয়েছিল কি না! ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তির রায় মেনে গোল দেননি মাঠের রেফারি। তখন গোললাইন প্রযুক্তির অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন ধারাভাষ্যকাররা।

কারণ ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে শুধু লা লিগাতেই নেই গোল লাইন প্রযুক্তি। এ নিয়ে লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস বলেছিলেন, ‘‘এটা বেশ ব্যয়বহুল’’। অথচ এই টেকনোলিজ আছে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগেও!

https://twitter.com/pubitysport/status/1782152440248148067

বিরতির আগে ৩১ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন জানিয়েছিল বার্সা। কামাভিঙ্গার সঙ্গে সংঘর্ষ হলে বক্সে পরে গিয়েছিলেন লামিনে  ইয়ামাল। তবে পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। বার্সা ভিত্তিক অনলাইনগুলোর দাবি, প্রায় একইরকম ফাউলে পেনাল্টি দেওয়া হয়েছে রিয়ালকে।

 তবে এরপর বক্সের ঠিক বাইরে ইয়ামালকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন কামাভিঙ্গা। প্রতিভাবান এই কিশোরকে আটকাতে হিমশিমই খাচ্ছিল রিয়ালের ডিফেন্ডাররা। বিরতির ঠিক আগে চোট পেয়ে ফ্রাংকি ডি ইয়ং মাঠ ছাড়লে বদলি হিসেবে নামেন পেদ্রি।

৫০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জুড বেলিংহামের শট ঠেকান বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেন। এর ৫ মিনিট পর অল্পের জন্য আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিসিয়ুস। ৬২ মিনিটে মিস করেন বার্সার রবার্ট লেভানদোস্কিও।

এর দুই মিনিট পর লেভানদোস্কি ও রাফিনিয়াকে তুলে নিয়ে জোয়াও ফেলিক্স আর ফেররান তরেসকে নামান কোচ হিসেবে শেষ এল ক্লাসিকোয় বার্সার ডাগআউটে থাকা জাভি এর্নান্দেস। ফেলিক্স এর আগে কখনও রিয়ালের বিপক্ষে গোল বা অ্যাসিস্ট করতে পারেননি। এবারের এল ক্লাসিকোতেও বদলায়নি ভাগ্যটা।

বদলী নেমে তরেস বল জালে জড়িয়েছিলেন ৬৭ মিনিটে। তবে গোল হয়নি অফসাইডের কারণে।

৬৯ মিনিটে ফেরমিন লোপেজ এগিয়ে দেন বার্সাকে। লামিনে ইয়ামালের ক্রসে তরেসের বেকহিল ঠেকিয়েছিলেন গোলরক্ষক লুনিন। তবে ফাঁকায় থাকা লোপেজ নষ্ট করেননি সুযোগটা।

রিয়ালকে ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরান লুকাস ভাসকেস। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অসাধারণ ক্রস থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ভাসকেসকে তখন বাঁধা দেওয়ার মত কোন ডিফেন্ডার ছিল না আশেপাশে।

৭৮ মিনিটে লুনিনের বুদ্ধিদীপ্ত পাসে গোল করার সুযোগ তৈরি করলেও  ভিনিসিয়ুসের শট রুখে দেন স্টেগেন। এরপর ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ভাসকেসের পাসে সঠিক জায়গায় থাকা জুড বেলিংহামের সেই গোল।

এই মৌসুমে লা লিগায় এটা তার ১৭তম গোল। এ নিয়ে এল ক্লাসিকোয় ৩ ম্যাচ খেলে ৩ গোল আর একটি অ্যাসিস্ট কররেছেন বেলিংহাম। জিতেছেনও তিন ম্যাচেই।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত