Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

নিষেধাজ্ঞা উঠল, ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে পারে সোমবার

পেঁয়াজ
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

পাঁচ মাস পর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত সরকার। শনিবার সকালে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিজিএফটি এক প্রজ্ঞাপনে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম রোজার ঈদের পর থেকেই বাড়তির দিকে। এর মধ্যেই ভারত সরকারের কাছ থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা এল।

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সোমবারই দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে ঢুকলে দামও কমে আসবে বলে মনে করছেন তারা।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “পেঁয়াজ আমদানির জন্য আমরা আগে থেকেই আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছিলাম। ঋণপত্র খুলে রেখেছিলাম ডিসেম্বরেই। সেগুলোর মেয়াদ এখনও বহাল আছে। সেই আইপি দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আনতে সর্বোচ্চ ২ দিন সময় লাগবে।”

তিনি বলেন, “সোমবার দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকলে সীমান্তে পাইকারিতেই আমরা কেজি ৫০ টাকা এবং খাতুনগঞ্জে ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। পরে পেঁয়াজ বেশি আসলে দাম ধারাবাহিকভাবে কমবে।”

রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর ভারতের কৃষকরা এখন প্রতি টন পেঁয়াজ ন্যূনতম ৫৫০ ডলারে রপ্তানি করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদুল ইসলাম বলেন, “প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলারে বেঁধে দেওয়াটা আসলে ভারতের সরকারি সিদ্ধান্ত। কিন্তু বাস্তবে তো এর চেয়ে অনেক কম দামে পেঁয়াজ দেশে আসে। এটা সবাই জানে। আর এজন্যই তো আমরা কম দামে পেঁয়াজ দেশে বেচতে পারি।”

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে শনিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৬ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।

তবে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় দাম কিছুটা কমবে বলে মনে করেন খাতুনগঞ্জের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আমরা একটু আগেই শুনেছি। সবাই এখনও বিষয়টি জানে না। আর মাত্র তো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলো। ঋণপত্র খুলে পেঁয়াজ আনতে তো কিছুটা সময় লাগবে। তবে তার আগেই বাজারে দাম কমবে বলে আমার ধারণা।”

ইদ্রিস বলেন, পাইকারিতে এখন দেশি বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়। আর ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬০ টাকায়। আর চোরাইপথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জের বাজারে এখন দেখা যাচ্ছে না।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই নতুন প্রজ্ঞাপন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ভারত থেকে সরকারিভাবে কিছু পেঁয়াজ আমদানি করে বাংলাদেশ। পাশাপাশি চোরাইপথে স্থলবন্দর দিয়েও বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ ঢোকে দেশে। এতে সরকার শুল্ক থেকে বঞ্চিত হলেও দেশের বাজারে পেঁয়াজের চড়াভাব কিছুটা কমে।

ভারতের মহারাষ্ট্রের বড় অংশজুড়েই পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখায় ন্যায্য দাম না পেয়ে বিক্ষোভে নেমেছিল সেই অঞ্চলের কৃষকরা। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনও করেছিল তারা। কিন্তু তাতে সরকারের সিদ্ধান্তে বদল আসেনি।

আর এখন লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী ধাপে ক্ষমতাসীন বিজেপি মহারাষ্ট্রে বাড়তি সুবিধা পেতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত