Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

জোকার টু: ট্রেইলার দেখে যা বোঝা যায়

joker main
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

বক্স অফিসে আলোড়ন তোলা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জোকার সিনেমার সিক্যুয়াল ‘জোকার ২: ফোলি আ দ্যুঁ’- এর ট্রেইলার মু্ক্তির ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই কেবল ইউটিউবেই দুই কোটি ভিউ ছাড়িয়েছে।

২ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এই ট্রেইলারে লেডি গাগা আবির্ভূত হয়েছেন মূল নায়ক ‘আর্থার ফ্লেক’-এর প্রেমিকা ‘হার্লে কুইন’-এর চরিত্রে। এর আগের জোকার সিনেমায় নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হলিউড অভিনেত্রী মার্গট রবি।

‘আর্থার ফ্লেকে’-এর চরিত্রটির অভিনেতা অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ অভিনয় করেছেন হোয়াকিন ফিনিক্স।

ট্রেইলার দেখে আপাতদৃষ্টিতে ‘আর্কহাম অ্যাসাইলাম’ -এ এই জুটির মিলিত হওয়া এবং প্রেমে পড়ার কথা মনে হবে। পরে পালিয়ে একটি মিউজিক্যাল দলও গঠন করে দুই চরিত্র।

জোকার সিনেমার সিক্যুয়েলকে বরাবরই বলা হচ্ছিল ‘মিউজিক্যাল’ হবে। তবে পরিচালক টড ফিলিপস বলেন, “গুজব অনুযায়ী এটি একটি মিউজিক্যাল সিনেমা নয়, তবে সঙ্গীত  এই সিনেমার একটি অপরিহার্য উপাদান।”

হোয়াকিন ফিনিক্স ২০১৯ সালে ‘জোকার’-এ অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার জিতে নেন। দেড়যুগেরও বেশি সময় যে লেডি গাগা গানের পাখি হিসেবে পশ্চিমের ঘরে ঘরে পরিচিত হয়ে উঠেছেন, ‘জোকার’ সিনেমার সিক্যুয়েলের ট্রেইলারে সেই শিল্পীর সুরেলা কণ্ঠে কেবল দুইটি সংলাপ শোনা গেছে। শোনা যায়নি কোনও গান।

‘জোকার’ সিনেমায় গোথাম শহরের এক কমেডিয়ানের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছিল, যে কিনা একের পর এক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিল। সমাজের নিপীড়িত মানুষের প্রতিশোধস্পৃহা ও জমানো ক্ষোভকেই ‘জোকার’ চরিত্রটির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল। ডিসি কমিক্স এর মূল গল্পে হার্লে কুইন চরিত্রটি ছিল জোকারের মনোচিকিৎসক। তবে জোকার টু-তে হার্লে কুইনের ঠিক সেই ধারাবাহিকতাই রক্ষা করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত নয়। ট্রেইলার থেকে যে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে সেগুলো হলো-

১. নতুন হার্লে কুইন লেডি গাগা

আর্থার ফ্লেক ওরফে জোকার এবং হার্লে কুইনের চোখে চোখ রাখা দেখানো হয়েছে ‘আর্কহাম অ্যাসাইলাম’ নামের একটি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। আর্থার ফ্লেককে নিরাপত্তারক্ষীরা নিজেদের একটি অনুষ্ঠানে পারফরমেন্স করানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছিলো, তখন হার্লে কুইনকে একজায়গায় লাইন ধরতে দেখা যায়। ডিসি কমিক্সের মূল গল্পে হার্লে কুইন জোকারের প্রেমে পড়েছিলেন, সমব্যথীও ছিলেন।

ট্রেইলারের দেখে তাই বোঝার উপায় নেই, জোকারকে অপরাধে সহায়তা করায় হার্লে কুইনকে জোকারের সঙ্গে বন্দি করা হয়েছিল না কি তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবেই এ মুভিতে রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিনোদন পত্রিকা আইজিএন-এর জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক অ্যালেক্স স্টেডম্যান লিখেছেন, “মনে হচ্ছে এ পর্বে হার্লে কুইনের চরিত্র মূল গল্পের থেকে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। কারণ এ পর্বের ট্রেইলারে তার চেহারা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরিবর্তে আর্কহাম অ্যাসাইলামের একজন রোগী হিসেবেই বেশি খাপ খাইয়েছে।”

কিন্তু হার্লে কুইন যদি সেখানে রোগী হিসেবেই থাকেন, তাহলে সে কীভাবে জোকারকে পালাতে সাহায্য করতে পারে, তা ব্যাখ্যা করতে অবশ্য সিনেমাটি দেখাই লাগবে।

ট্রেইলারের একটি দৃশ্যে দেখানো হয় হার্লে কুইন ফিসফিস করে বলছে, “চলো এখান থেকে বেরিয়ে যাই।”  তখন তাদের সামনে মঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলছিল।

এই দৃশ্য থেকে সরাসরি কাট করে দুইজনকে দেখানো হয় গোথাম সিটির রাস্তায়। সেখানে তাদের নাচের কারণে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা।

২. জোকার ও হার্লে কুইন ব্যান্ড

“নিজেদের সম্পূর্ণতা আনতে আমরা সঙ্গীতের সাহায্য নিই- নিজেদের ভেতরের ভাঙনের ভারসাম্য বজায় রাখতে নেই তার আশ্রয়,” জোকার চরিত্রটিকে ভয়েসওভারে বলতে শোনা যায়।

প্রেম এবং অপরাধের পাশাপাশি জোকার সঙ্গীতের জন্যও একজন সঙ্গী খুঁজে পেয়েছে। ট্রেইলারের এক দৃশ্যে জোকার ও হার্লে কুইনকে একটি টিভি শোতে সম্পূর্ণ ব্যান্ড এবং সহ-গায়কদের সঙ্গে পারফরমেন্স করতে দেখা যায়।

‘হোয়াট দ্য ওয়ার্ল্ড নিডস নাউ ইজ লাভ’ ১৯৬৫ সালের জ্যাকি ডিশ্যাননের বিখ্যাত গান।  এটির ট্র্যাক ব্যবহার করেই ট্রেইলারটি তৈরি হয়েছে।

৩. পাথুরে সিঁড়ি

জোকার চলচ্চিত্রটির  সবচেয়ে বিখ্যাত দৃশ্যগুলোর একটি ছিল-  তার পাথরের সিঁড়ির ওপর নাচ। নতুন ট্রেইলারে, হারলে কুইনকে একই জায়গায় নাচতে দেখা গিয়েছে। অন্য একটি দৃশ্যে হার্লে কুইন ও জোকার তার আসল নাচের নকল করছেন। এখানকার সিঁড়ির ধাপগুলো অনেকটা কোর্ট হাউসের মতো। আর এই দৃশ্যেই নৃত্যরত দুইজনের দুইপাশে উল্লসিত মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে।

৪. শুভ্র বিয়ের দৃশ্য

একটি দৃশ্যে হার্লে কুইনকে সাদা বিয়ের পোশাক এবং ঘোমটা পরে চ্যাপেলের একটি আইলে নাচতে দেখা যায়, যেখানে জোকার একটি সাদা স্যুট পরে অপেক্ষা করছে। তার পেছনে রয়েছে নেপথ্য গায়কদের একটি দল, যাদেরকে দেখলে মনে হয় বরের সহচর।  এই দৃশ্য দেখেও হলিউডের ক্লাসিকাল মিউজিক্যাল মুভিগুলোর কথা মনে পড়ে যায়।

৫. অতিথি চরিত্রে ব্রিটিশ অভিনেতা স্টিভ কুগান

ব্রিটিশ কমেডিয়ান ও অভিনেতা স্টিভ কুগানকে দেখা গিয়েছে একজন কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তির চরিত্রে। ট্রেইলারে তাকে জোকারকে জিজ্ঞাসা করতে দেখা যায়, “বলো আর্থার, কী বদলেছে?”

জোকার উত্তর দেয়, “সে আর একা নয়।”

ট্রেইলারে কুগানের উপস্থিতি কিছু লোককে তার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র অ্যালান পার্টট্রিজের একটি সংলাপের পুনরাবৃত্তির স্মৃতিতে নিয়ে গিয়েছিল। আর সেটি হলো- ‘আই অ্যাম ব্যাটম্যান’।  লোকে মনে করেছিল- এটা হতে পারে এই প্লটের টুইস্ট।

কেননা, ‘জোকার’ ডিসি কমিকস ইউনিভার্সের অংশ। তবু এতে এখন পর্যন্ত ব্যাটম্যান বা অন্য কোনও সুপারহিরোর আবির্ভাব হয়নি।

ট্রেইলারের শেষ দৃশ্যে কাচের ওপরে লিপস্টিকের দাগ।

৬. একটি দুর্দান্ত চূড়ান্ত দৃশ্য

রাস্তায় দাঙ্গা, টিভি ক্যামেরা, এবং জোকার এবং হার্লে কুইনকে একটি জ্বলতে থাকা বিল্ডিং থেকে হাতে-ধরে দৌড়ে বেরিয়ে আসছে।  এমন উত্তেজনাকর বেশ কয়কেটি শটের পরে ট্রেলারটি শেষ হয় শান্তভাবে।  শেষ দৃশ্যে হার্লে কারাগারে আর্থারের সঙ্গে করে।  আর্থার কয়েদির প্রান্তে।

হার্লে কুইন লাল লিপস্টিক ব্যবহার করে পার্টিশন কাচের ওপর একটি বাঁকা রেখা আঁকে এবং জোকারকে বলে, “আমি আসল তুমিটাকে দেখতে চাই।”

ফিনিক্সের আদুরে মুখটি ধীরে ধীরে সরে যায় এবং একটি বড় হাসিতে ভাঙ্গে, ফোকাসে কাচের এপাশে আঁকা লিপস্টিকের মিলে যায় এবং হঠাৎই জোকারের বিখ্যাত লাল মুখের রঙে পরিণত হয়।

৭. মুক্তির তারিখ

ট্রেইলারটি আসলে মুক্তির তারিখ দেখানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় – ‘10.04.24’। এর মানে এটির মুক্তি এ মাসের ১০ তারিখেই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের একথাও ভুলে গেলে চলবে না, আমেরিকানরা তাদের দিন এবং মাসগুলোকে উল্টিয়ে লিখেন। তাই ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত