Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
বিশেষ সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন

‘আমি ‍সুযোগের অপেক্ষায় আছি’

eeeeeeeeee
Picture of শিহাব উদ্দিন

শিহাব উদ্দিন

বাংলাদেশ দলে “পেস বোলিং অলরাউন্ডারের” অনেকদিনের অভাব দূর করে এসেছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ২০১৯ বিশ্বকাপের তার দায়িত্বও ছিল অনেক। তবে ওই ২০১৯ বিশ্বকাপের পর যেন হারিয়েই গিয়েছিলেন। সেই সাইফউদ্দিন গত বিপিএলে পারফরম করেছেন। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের আলোচনাতেও চলে এসেছেন। সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে সাক্ষৎকারে জানালেন বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা তারও আছে।   

প্রশ্ন : ইনজুরি কাটিয়ে বিপিএলটা দারুণ কাটলো আপনার। এখন ডিপিএল খেলছেন, কতটুকু ফিট হলেন?

সাইফউদ্দিন : আলহামদুলিল্লাহ, ডিপিএলে ৮ ম্যাচ পর আমি প্রথমবার ১০ ওভারের পূর্ণ কোটা বোলিং করলাম। এতদিন ১০ ওভার বল করতে পারছিলাম না। বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকেও এ নিয়ে চিন্তায় ছিল যে আমি ১০ ওভার বোলিং করতে পারব কিনা। সেই সঙ্গে নিজের কাছেও খুব ভালো লাগছে যে পূর্ণ কোটা বল করার মতো অবস্থায় ফিরে এসেছি। আমার টিম ম্যানেজমেন্টও খুশি এতে। তো সবদিক থেকে ইনজুরি কাটিয়ে উঠার ব্যাপারটায় আমি বেশ ভালো ভাবেই এগিয়েছি।

প্রশ্ন: বিপিএলে পারফরম করে তো আলোচনায় আসলেন। এখন ডিপিএল দিয়ে জাতীয় দলে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের নিজের জায়গাটা ফিরে পেতে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

সাইফউদ্দিন : বিপিএলটা বেশ ভালো কাটিয়েছি। এবার ডিপিএলটাও ভালো যাচ্ছে। সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আছে দুটো। বিশ্বকাপরও আছে। আমি চেষ্টা করবো ঘরোয়া লিগে ভালো করে যেন দলে সুযোগ পেতে পারি। আমার হাতে তো এখন এই ঘরোয়া ক্রিকেটেই কিছু করার সুযোগ আছে।

প্রশ্ন: পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ব্যাপারটা বলছিলাম। আপনি দল থেকে বাদ পড়ার পর এ অভাব পূরনে কাউকে পাওয়া যায়নি। জাতীয় দলে নিজেকে আবার সেই জায়গায় দেখতে কতটুকু আত্মবিশ্বাসী?

সাইফউদ্দিন : বোলিংটা তো আমার মনে হয় ভালো ভাবে করতে পারছি। দলের চাহিদা মতো করতে পেরেছি আজ। সামনে এই জায়গাটা আরও বাড়বে। ভালোই হচ্ছে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সুযোগটা পাচ্ছি না সেভাবে। আপনারা জানেন যে আমি খেলিই ৬-৭ নম্বরে। ডিপিএলে আবাহনীর ৬-৭ নম্বরের ব্যাটার সব ম্যাচে কিন্তু খেলতে পারে না। তবুও কয়েকটা ম্যাচ খেলে ২০-২৫ রান করেছি। তো আমি যদি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও সুযোগ পেতাম তাহলে আমার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সটা দেখাতে পারতাম। ভালো লাগতো। তারপরও আমাদের দল ভালো খেলছে। টপঅর্ডাররা সবাই রান করছে এটাও তো দলের জন্য ইতিবাচক দিক।

প্রশ্ন: বিপিএলে দারুণ কিছু ইনিংস খেলেছিলেন। সেজন্য আপনি কি সন্তুষ্ট?
সাইফউদ্দিন : অবশ্যই সন্তুষ্ট। সবাই দেখেছে আমি বরিশালের হয়ে কয়েকটা ম্যাচে ক্যামিও ইনিংস খেলেছি। যেগুলো দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছে। ইনজুরি থেকে ফিরে আসার পর ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাওয়া এবং ওই রকম কিছু ইনিংস খেলতে পারায় সত্যি ভালো লেগেছে। পারফরম্যান্সের কথা যদি আসে তাহলে আমি বিপিএলে তা দেখাতে পেরেছি বলব। নিজের কাছেও ভালো লেগেছে।

প্রশ্ন: তার মানে সুযোগ পেয়ে বিপিএলে ভালো করাটা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে?

সাইফউদ্দিন : অবশ্যই। কারণ যদি সুযোগ না পান তাহলে আপনি কিভাবে নিজেকে প্রমাণ করবেন? আবার আরেকটা বিষয় হলো ৫-৬ মাস পর কঠিন সময়ে একটা দুটো ইনিংস খেলার সুযোগ পান তখনও কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করা কঠিন হয়। তবে নিয়মিতদ সুযোগ পেতে থাকলে যে কোন ক্রিকেটারের জন্যই এমন হয় যে এক-দুটো ম্যাচ ভুল করলেও তা কাটিয়ে সে পারফরম্যান্সে ফিরতে পারে। তবে আবাহনীর হয়ে ডিপিএল নিয়ে আমার তেমন আফসোস নেই। আবাহনী তো চ্যাম্পিয়ন দলই করে এখানে সেরা ক্রিকেটাররা খেলেন। সুযোগ পাওয়াটা কঠিন। দল জিতলেই আমি খুশি। সেটা যদি ১ বলও ব্যাট করতে না পারি তাহলেও সমস্যা নেই। আমরা আসলে দল নির্ভর, ব্যাক্তিগত অর্জন বা লক্ষ্য এখানে মূখ্য না।

প্রশ্ন: এখন নতুন নির্বাচকরা এসেছেন। তারা নতুন বার্তা দিয়েছেন যে পারফরমাররাই সুযোগ পাবে। অটোচয়েজ কেউ নয়। তো বিপিএলে পারফরম করার পর তাদের কাছে জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে কেমন আশা রাখেন

সাইফউদ্দিন : আমি জাতীয় দলে ফেরার আশা তো করছি। আমি জানি না আমাকে নিয়ে নির্বাচকদের ভাবনা এখনও কি। ইনশা আল্লাহ ইতিবাচক কিছুই হবে। এখনই আর কিছু বলছি না। আমি সুযোগের অপেক্ষায় আছি।

প্রশ্ন: আপনার বোলিংয়ের দিকে তাকাই। ডেথ ওভারে ইয়র্কার দেয়ার সুনাম আপনার আছে। বিপিএল ফাইনালে আন্দ্রে রাসেলকে টানা চারটি ইয়র্কার দিলেন। এত নিঁখুত ইয়র্কার করার পর আপনার বোলিংয়ের আত্মবিশ্বাসটা এখন কেমন?

সাইফউদ্দিন : অবশ্যই ভালো। আসলে ডেথ ওভারে তো ওই রকমই বল করতে হয়। সেদিন আমার চিন্তা ছিল রান কম দেয়ার জন্য টানা ইয়র্কার করা। এই চিন্তা সব ম্যাচে এক রকমই থাকে। কখনও সফল হই – কখনই হই না। সেদিন সফল হয়েছিলাম। টানা ইয়র্কার করছি – পেসার হিসেবে এটা দেখা সত্যিই আনন্দের।

প্রশ্ন: ইনজুরি থাকার সময়ে একবার কথা উঠেছিল যে আপনি বলেছেন বিসিবি আপনার পাশে নেই। এরপর বিসিবির চিকিৎসাতেই সেরে উঠলেন। এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে যদি একটু পরিষ্কার করতেন?

সাইফউদ্দিন : প্রথমত আমি ওই রকম কিছু বলি নাই যে বিসিবি আমার পাশে নেই। এটা মানুষের বোঝার ভুল। যারা নিউজটা করেছে সেটা ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেছে। আমি ওভাবে বলিনি কথাটা। কারণ আপনারা সবাই দেখেছেন বিসিবি আমাকে কাতারে ইনজুরির চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। অ্যাকাডেমিতে থেকে আমি রিহ্যাব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। তো বোর্ডের সমর্থন না থাকলে আমি এত ভালো ভাবে ফিরে আসতে পারতাম না।

প্রশ্ন: ইনজুরিতে পড়ার সময়টাতে আপনি বিয়ে করলেন। বিয়ের পর আপনার ক্যারিয়ারটাও ভালো দিকে মোড় নিল। ইনজুরি থেকে সেরে উঠলেন, এখন ভালো খেলছেন। বিয়েটা আপনার জন্য গুডলাক হয়েছে কিনা?

সাইফউদ্দিন : আসলে বিয়ের পরও খেলতেছিলাম। এরপর ইনজুরিতে পড়েছি আরকি। তো সব মানুষের পাশেই তো পরিবার থাকে। আমার সঙ্গেও কঠিন সময়ে মা পাশে ছিল, স্ত্রী সাহস জুগিয়েছে। ওই সময় নিজেও সাহস ধরে রেখে চেষ্টা করে গেছি। নিজেকে বলেছি যে যত সময় লাগার লাগুক আমি প্রক্রিয়া মেনে ফিট হওয়ার চেষ্টা করে যাব। তো ফলশ্রুতিতে এখন বিপিএলে ভালো করলাম, ডিপিএলেও ভালো করছি।

প্রশ্ন: ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় আপনার ব্যাপারে একটা কথা উঠেছিল যে বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আপনি খেলতে চান না। ইনজুরির ব্যাপারটা সামনে আনেন। এই ব্যাপারটা সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি?

সাইফউদ্দিন : এটা তো অতীত এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না। তবে একটা বিষয় হলো ওই বিশ্বকাপের পর থেকে ওই ইনজুরির কারণে আমি ৬ মাস মাঠের বাইরে ছিলাম। দিনের পর দিন কোমড়ের ওই ব্যাথা নিয়েই ভুগছি। বিসিবি কাতার পাঠাল ওই ইনজুরির চিকিৎসা করাতেই তো এটা কতটুকু সত্য বা মিথ্যা তা আশাকরি সবাই বুঝতে পেরেছে।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্নটা কি আপনার?

সাইফউদ্দিন : স্বপ্ন তো অবশ্যই আছে। বিশ্বকাপ তো। এখন সামনে তো খুব বেশি একটা সুযোগ নেই। মাত্র দুটো সিরিজ, জিম্বাবুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। চেষ্টা থাকবে সামনের সিরিজটায় দলে ঢুকে পারফরম করা এবং তা থেকে যদি বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাই।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত