Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ভাইরাল ‘স্যামসাং’ গানটি আসলে কী বলছে

Chinese Song
Picture of সৈয়দ ফরহাদ

সৈয়দ ফরহাদ

টিকটক কিংবা ফেইসবুকে চীনা গান ভাইরাল হওয়ার ঘটনা বিরল। সম্প্রতি একটি চীনা গান সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মগুলো সরগরম করে রেখেছে, যেটি ‘স্যামসাং’ গান হিসেবেই পরিচিত।

টিকটকের মালিকানা চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের হলেও, সেদেশের কোনও গানের কন্টেন্ট টিকটকে ভাইরাল হওয়ার ঘটনা বিরল ও ব্যতিক্রম।

বৈশ্বিকভাবে যে কোনও কন্টেন্ট ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চীন ছাড়া সারাবিশ্বের মানুষের কাছেই চীনা মান্দারিন ভাষা খটোমটো ঠেকে। বলা যায়, এই ভাষার কনটেন্ট ও গান বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের কান খুব সহজে নিতে অভ্যস্ত নয়।

কাজেই মান্দারিন ভাষার কনটেন্টে বিশেষ কিছু না থাকলে, সেটির ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। আর গান ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে ভাষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গীতবোদ্ধাদের কারও কারও মতে, গানের লিরিক্স বৈশ্বিকভাবে পরিচিত ভাষায় হলে, সেটির ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ।

যদিও পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি চর্চিত ভাষার মধ্যে মান্দারিন দ্বিতীয়, কিন্তু সেটি কেবল চীনাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেই তুলনায় ইংরেজি ভাষীর সংখ্যা অনেক কম হলেও, বৈশ্বিক শ্রোতাদের কাছে ব্যাপকভাবে ভাষাটি পরিচিত। ফলে এই ভাষার গান ভাইরাল হতেও বেশি দেখা যায়।

আরেকটি বিষয় হলো টিকটকের অ্যালগরিদম।

টিকটকের অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীদের অবস্থান এবং পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে বিষয়বস্তুকে ছড়িয়ে দেয়। চীনা গান স্বাভাবিকভাবেই চীনে জনপ্রিয়। কিন্তু তাদের গানের বিষয়বস্তু প্রধানত স্থানিক হওয়ায় বৈশ্বিক শ্রোতাদের চাহিদা খুব কম মেটাতে পারে।

এমনকি নিজস্ব সঙ্গীতের বৈশ্বিক বাজার ধরার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছে চীন।

মূলত, নিজেদের সুবিশাল বাজারের চাহিদা মেটাতেই চীনা মিউজিক কোম্পানিগুলো বেশি জোর দেয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সঙ্গীতের বাজার প্রসারে চীনাদের তেমন মাথাব্যথাও নেই। তাই চীনা গান তেমনভাবে বিশ্বের অন্য কোথাও গাওয়াও হয় না, পরিচিতও নয়।

ভাইরাল চীনা গান ‘স্যামসাং’

গানটির চীনা ভাষায় টাইটেল ‘জিন শেং ইয়েন’। ২০০৯ সালে প্রকাশিত গানটি চীনা শিল্পী চুয়ান জি এর অন্যতম একটি জনপ্রিয় গান। যদিও টিকটকে গানটি পোস্ট করা হয় এই বছরের মার্চ মাসে। আর এরপরই এটি ভাইরাল।

গানটি টিকটকে প্রথম ছাড়া হয় নামহীন এক ইউজারের অ্যাকাউন্ট থেকে। যেখানে দেখানো হয় ট্যালেন্ট শো-তে একজন গায়ক গানটি গাইছেন, বিচারকরা অশ্রুসিক্ত নয়নে গানটি শুনছেন। দুটো ভিন্ন ভিন্ন ক্লিপ জোড়া দিয়ে ভিডিওটি বানানো।

গানটি শুনে সারাবিশ্বের ভিন্ন ভাষাভাষী টিকটিক ও সোশাল মিডিয়া ইউজাররাও দিয়েছেন আবেগী প্রতিক্রিয়া। তাদের বেশিরভাগেরই প্রশ্ন- এই গান শুনেই কেন এমন অশ্রুসিক্ত হয়ে যাচ্ছে চোখ?

সোশ্যাল ভিডিও ইনসাইট প্ল্যাটফর্ম টিউবুলার দাবি করছে, এপ্রিল মাস নাগাদ মাত্র একমাসে ‘স্যামসাং’ গানটি চীন, জার্মানি, জ্যামাইকা, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই কোটি বার বেশি দেখা হয়েছে। আর এই গানের ভিত্তিতে টিকটক, ফেইসবুক রিল এবং ইউটিউব শর্টসে পারফর্ম্যান্সের সংখ্যা এবং সেগুলোর ভিউ অগুণতি।   

‘জিন শেং ইয়েন’ এর অর্থ ইংরেজিতে ‘দিজ লাইফস ফেইট’। বাংলায় ‘এই জীবনের ভাগ্য’।

আর গানে শোনা যাওয়া ‘স্যামসাং’ শব্দটি আদৌ ‘স্যামসাং’ নয়। গানের অন্তরায় বারবার ব্যবহৃত শব্দ ‘ক্যাংস্যাং’-ই, আসলে চীনা ছাড়া অন্যভাষীদের কাছে শুনতে ‘স্যামসাং’ লাগে। ‘ক্যাংসাং’ শব্দের অর্থ হলো ‘জীবনের উত্থান পতন’। পশ্চিমের টিকটক ও সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা মজা ও বিদ্রুপ করে দক্ষিণ কোরিয়ার ফোন কোম্পানি ‘স্যামসাং’ এর নামে এই গানটি পরিচিত করেছেন।

ইংরেজিতে এই গানের কথাগুলো হলো এরকম-

“আওয়ার লাভস আর ডেস্টাইন্ড টু বি ফুল অভ আপস অ্যান্ড ডাউন

উই ক্রাইড হোয়েন উই কেইম, লেটস লিভ উইথ আ স্মাইল

মাই ফ্রেন্ড, লেটস রিমেম্বার ইট ওয়েল টুগেদার

দিজ এভারলাস্টিং ব্রাদারহুড উই শেয়ার ইন দিজ লাইফ…”

স্মৃতিকাতরতায় ভরা এই গান জীবন এবং মৃত্যুর গল্প বলে। এই গানে উঠে এসেছে মানব জনমে বন্ধুত্বের আকুতি, নির্ভরশীলতা এবং ভালোবাসা।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত