Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

যে কারণে চড়ছে রাখি পণ্যের দাম

SS-kitchen-market-030524
Picture of শেখ শাফায়াত হোসেন

শেখ শাফায়াত হোসেন

আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদার মতো রাখি পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। আলুর কেজি ৬০ টাকা হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকের ঘরে থাকা আলু এখনও বিক্রি হচ্ছে। তবে এই আলুও শেষ হয়ে আসছে। এর পরের দফায় বাজারে আসবে হিমাগারের আলু, তখন দাম আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু শুক্রবার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “উত্তরবঙ্গ ও মুন্সীগঞ্জের আলু দিয়েই দেশের আলুর চাহিদা মেটে। এবার আলুর দাম কৃষকরাই বেশি পেয়েছেন।

“আজকে (শুক্রবার) ৪১ টাকা করে রংপুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় কৃষকের আলু বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে গাড়িভাড়া যোগ হবে। আড়তদার ও পাইকারদের মুনাফা যোগ হবে। খুচরা বিক্রেতারা ৬০ টাকার নিচে বিক্রি করবেন কীভাবে?”

কৃষকের কাছ থেকে আলু কেনার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১৭ টাকা দাম নির্ধারণ করেছিল বলে জানান বাবু।

তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের আলুর দাম ধরা হয়েছিল ১৯ টাকা, মুন্সীগঞ্জের ১৫ টাকা। গড় করা হয়েছিল ১৭ টাকা। কিন্তু এই দামে কৃষকদের কাছ থেকে আলু কেনা যায়নি। তারাই কেজি ২৫ টাকার বেশি দরে আলু বিক্রি করেছে। এর সঙ্গে হিমাগারের খরচ যোগ হবে। এর সঙ্গে যোগ হবে গাড়ি ভাড়া ও মুনাফা।”

সংরক্ষণ করা আলুর দাম আরও বাড়বে জানিয়ে চাষী কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবু বলেন, “হিমাগারের আলু এখনও বাজারে ছাড়া শুরু হয়নি। আরও এক মাস পর থেকে হিমাগারের আলু বাজারে আসবে।”

হিমাগারে এক কেজি আলু রাখতে ৭ টাকার বেশি খরচ পড়ছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

রাজশাহীর আলু ব্যবসায়ী ভাই-ভাই এন্টারপ্রাইজের মালিক আ. মতিন জানান, বর্তমানে তারা মোকামে ৪২ টাকা ২৫ পয়সা দরে সাদা ও লাল আলু বিক্রি করছেন। কৃষকের কাছ থেকে ৪১ টাকায় এই আলু কিনে মোকামে বিক্রি করছেন। ঈদের আগে এই আলু ৩৫-৩৬ টাকা করে বিক্রি করেছেন। এখন সরবরাহ কমে আসায় দাম বাড়তি।  

পাশের দেশ ভারতেও সপ্তাহখানেক ধরে আলু দাম বাড়ছে।

শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলুর দাম আরও বাড়তে পারে। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে- এবার আলুও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। হু হু করে দাম বাড়ছে।

বর্তমানে কলকাতার বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি দরে। কোথাও আবার সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা প্রতি কেজি দরে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অনেকের চন্দ্রমুখী আলুর প্রতি একটা ঝোঁক থাকে। কিন্তু সেই আলুর দামও ৩২ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি। এবার মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম ছিল ২০-২২ টাকা প্রতি কেজি। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে সেই আলুর দাম ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

আলুর পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজারে দেশি পেঁয়াজের দামও ঊর্ধ্বমুখী। শুক্রবার নাটোরে দেশি পেঁয়াজ ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ (কেজি ৬০ টাকা) দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে।

গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে বলে জানান নাটোরের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ঈদের আগে এ ধরনের পেঁয়াজ ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দর অনুযায়ী, ঈদের সপ্তাহখানেক আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫০-৫৫ টাকা কেজি। সেই দাম বেড়ে শুক্রবার বাজারভেদে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রান্নার আরেক অতিব্যবহৃত মসলা পণ্য রসুনের দামও বেড়েছে।

বাজারঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা উভয় প্রকার রসুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার বাজারভেদে দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২৩০-২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে।

এসব মসলা পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে বিক্রেতারা সরবরাহ কম থাকার অজুহাত দিচ্ছেন।

মুরগির দামও বেশ চড়েছে। নাগালের বাইরে রয়েছে গরুর মাংসের দাম, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। আর খাসির মাংসের দাম কেজি ১১০০ টাকা।

তবে শাক-সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত