শীত এলেই শুরু বিয়ের ধুম! মেহেদি, হলুদ, বিয়ে, রিসিপশন আরো কত কী! শীতের সময় অন্যান্য অনুষ্ঠানের পরিমাণও বেড়ে যায়। তাই শীত হলো এক উৎসবের সময়। এসময় ঘিরে সবার থাকে বিশেষ প্রস্তুতি। তবে শীতের সময় ঝক্কি-ঝামেলাও কম পোহাতে হয় না মেয়েদের। কারণ ঠান্ডার মধ্যে নিজের সাজসজ্জা ঠিক রাখবেন নাকি শীত থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন- এই ভেবে অনেকেই কুল খুঁজে পান না। বিশেষ করে শাড়ি পরলে ঝামেলা আরো বাড়ে। তবে উপায় আছে। একটু বুঝেশুনে পোশাক বাছাই করলে আপনি শীত থেকেও বেঁচে যাবেন, আবার ফ্যাশনটাও রক্ষা পাবে।
ব্লেজার
হাল ফ্যাশনে ব্লেজার হয়েছে বেশ জনপ্রিয়। ব্লেজার শীতের সঙ্গেই যেন জড়িয়ে থাকা এক পোশাক। ইদানিং শাড়ির সঙ্গে ব্লেজার পরার ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে।
শাড়ির সঙ্গে যদি ব্লেজার পরতে চান, তাহলে এমব্রয়ডারি কিংবা প্যাচওয়ার্ক করা ব্লেজারই বেছে নিতে হবে। টুকরো টুকরো বিভিন্ন রঙয়ের কাপড়ের ব্যবহার করে প্যাচওয়ার্ক করা হয়। এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কাপড় ব্যবহার হয় প্যাচওয়ার্ক করা ব্লেজারকে রঙিন দেখাতে। প্যাচওয়ার্ক করা ব্লেজার তাই বেছে নেয়া যেতে পারে শীতকালীন যেকোনো অনুষ্ঠানে।
ভিন্নতা নিয়ে আসলে চাইলে ফুল, লতা-পাতা, পাখি ইত্যাদির এমব্রয়ডারি করা ব্লেজার বেছে নিতে পারেন। এতে শাড়ি ও ব্লেজারে আপনি হয়ে উঠবেন নান্দনিক।
পার্টির জন্য স্টোন দিয়ে তৈরি হয় নানা রকমের ব্লেজার। এখানে ফিটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাপ ঠিকঠাক না হলে বিপদ! দেখা গেল এমন আঁটসাঁট হয়েছে যে বিয়ে বা পার্টিতে গিয়ে ফিটিং আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
হাইনেক সোয়েটার
শাড়ির সঙ্গে হাইনেকের সোয়েটারও বেশ মানিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে শাড়ির আচল ভাঁজ করে রাখুন, দেখতে ভালো লাগবে। বেছে নিতে পারেন এক রঙা কোনো শাড়ি ও কালারফুল হাইনেক সোয়েটার। এছাড়া বিভিন্ন নকশার সোয়েটার অনায়াসে শাড়ির ওপর চাপাতে পারেন। এতে সবার নজর আপনার সোয়েটারের দিকেই থাকবে।
কটি
আজকাল শাড়ির ওপর কটিও চলছে বেশ। এটি আপনার লুকে নিয়ে আসবে ভিন্নতা। লং প্যাটার্নের কটি তাই পরতে পারেন শাড়ির সঙ্গে। ভিন্ন ভিন্ন নকশার কোন কটিতে আপনার শাড়ির সঙ্গে যায়, সেটি মিলিয়ে নিলেই সৌন্দর্যে শোভা বাড়াবে। প্রয়াত ভারতীয় রাজনীতিক সুষমা স্বরাজ, যিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন, বেশিভাগ সময়ই শাড়ির সাথে কটি পরতেন।
শাল
একটা বিষয় মানতেই হবে শাড়ির সবচেয়ে পরীক্ষিত ‘সৈনিক’ হলো শাল। শাল অনেকের কাছেই একঘেয়ে মনে হয় বলে শাড়ির সঙ্গে পরতে চান না। কিন্তু শালেও এখন এসেছে নানা বৈচিত্র্য। শালের ওপরও আজকাল করা হচ্ছে ভারী এমব্রয়ডারি কিংবা নকশি কাঁথার কাজ।
এছাড়া নতুন সব নকশা করা হচ্ছে খাদি শালে। আরও নান্দনিক করে তুলতে প্রিন্টের মাধ্যমে বসানো হচ্ছে প্রিয় কবিতার লাইন কিংবা গান। বিয়েতে বেছে নিতে পারেন সিকোয়েন্সের কাজ করা শাল। এছাড়া চুমকি ও পুঁতির কাজ করা শালও রয়েছে।
শালেও কিন্তু রয়েছে প্যাচওয়ার্ক। সাধারণ কোনো সুতির শাড়ির সঙ্গে প্যাচওয়ার্ক করা শাল বেশ মানিয়ে যায়। অনুষ্ঠানের জন্য অনেকে বেছে নিচ্ছেন ভেলভেট শাল। এতে যুক্ত করা হয় টার্সেল।
শাড়ির সঙ্গে সঠিক শীত পোশাক তো বেছে নিলেন। এদিক সামলাতে গিয়ে গয়না ও মেকাআপের প্রতি নজর কিন্তু হারালে চলবে না! কারণ শীত পোশাকে অনেক সময় গয়না ঢেকে যায়। এজন্য এমন গয়না নির্বাচন করতে হবে যেটা অবশ্যই চোখে পড়বে।
অনেকেই মনে করেন শাড়ির সঙ্গে শীত পোশাক পরলে সাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে শীত সহ্য করে শীত পোশাক এড়িয়ে যান। কিন্তু নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে যেকোন পোশাক আপনাকে মানাবে। শুধু জানতে হবে কায়দা করে শাড়ি পরা!