Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

কমল ২৩ ধরনের স্টেন্টের দাম

stent
হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানোর প্রতীকী ছবি

ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে বেড়েছিল হৃদরোগ চিকিৎসায় অতি গুরুত্বপূর্ণ স্টেন্টের দাম। দফায় দফায় বেড়ে যাওয়া সেই দাম অবশেষে কমেছে। মোট ২৩ ধরনের স্টেন্টের দাম কমিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলোর জন্যও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, হৃদরোগীদের জন্য ঘোষিত প্যাকেজে স্টেন্টের দাম উল্লেখ করে দিতে হবে। যেন রোগী বুঝতে পারেন প্যাকেজে স্টেন্ট বা রিং পরানো বাবদ কত খরচ হচ্ছে।

মঙ্গলবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালকের (প্রশাসন) সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশে ইউরোপীয় এবং অন্যান্য দেশের হার্টের রিং (স্টেন্ট) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছে।

সেখানে দেখা যায়, পোল্যান্ডের তৈরি অ্যালেক্স প্লাস ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৮০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা, অ্যালেক্স ব্র্যান্ডের স্টেন্ট ৬২ হাজার ৯২২ টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা, অ্যাবারিস ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৬১ হাজার ৯২১ টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

এছাড়া জার্মানির করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৫৯ হাজার ১১৯ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৩ হাজার টাকা, করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর নিও ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৭৩ হাজার ১২৬ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৫ হাজার টাকা, জিলিমাস ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৬০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডের ওরসিরো ব্র্যান্ডের স্টেন্ট ৭৬ হাজার টাকার বদলে ৬৩ হাজার টাকায় এবং ওরসিরো মিশনের দাম ৮১ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬৮ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি জেনোস ডেস ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৬ হাজার টাকা, স্পেনের ইভাসকুলার এনজিওলাইটের দাম ৮৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬২ হাজার টাকা, জাপানের আল্টিমাস্টারের দাম ৮৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৬ হাজার টাকা এবং নেদারল্যান্ডসের অ্যাবলুমিনাস ডেস প্লাসের স্টেন্টের দাম ৭১ হাজার ২০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

ভারতে তৈরি স্টেন্টের দামও কমিয়েছে অধিদপ্তর। মেটাফর ব্র্যান্ডের স্টেন্ট ৪৮ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার, এভারমাইন ফিফটি ব্র্যান্ডের স্টেন্ট ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার, বায়োমাইম মর্ফ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার, বায়োমাইমের স্টেন্ট ৬৫ হাজার ৫৯৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৪৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাফিনিটি-এমএস মিনির দাম ৯১ হাজার টাকার বদলে ৬০ হাজার টাকা, ডিরেক্ট-স্টেন্ট সিরোর দাম ৯৬ হাজার ৭৩২ টাকার বদলে ৬৬ হাজার টাকা এবং ডিরেক্ট-স্টেন্টের দাম ৩৩ হাজার ৫৯২ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের তৈরি বায়োমেট্রিক্স নিওফ্ল্যাক্স রিং ৭৬ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা, বায়োমেট্রিক্স আলফার দাম ৮৬ হাজার ৩৬ টাকা থেকে ৬৬ হাজার টাকা এবং বায়োফ্রিডমের দাম ১ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমে ৬৮ হাজার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই দাম কমানোর চেষ্টা করছিলাম, অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। সবগুলো কোম্পানি তাদের দাম কমিয়েছে, যে যতটুকু পেরেছে কমিয়েছে।”

কমানোর পর যে দাম দাঁড়িয়েছে তা ২০১৯ সালের দামের চাইতেও কম বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দাম কমানোর আলোচনার বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, “আমরা তাদের বলেছিলাম, ডলারের দাম বাড়ার আগের চাইতেও কমেছে। তোমরা ভারতে দাম কমিয়েছো, আমাদের দেশেও কমাতে হবে। কিন্তু ওরা বলছিল, আমাদের এখানে ছোট মার্কেটসহ অন্যান্য খরচ বেশি। কিন্তু আমরা ‘স্ট্রিক্ট’ ছিলাম।”

দাম কমানোর তালিকায় থাকা সবগুলো সেন্ট ভালো কোম্পানির জানিয়ে তিনি বলেন, “অতি দ্রুত হাসপাতালগুলোয় এ মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হবে এবং সেটা তাদেরকে পালন করতেই হবে। এমনকী হাসপাতালগুলো হৃদরোগীদের জন্য যেসব প্যাকেজ রাখে, সেখানেও সেন্টের দাম লিখে দিতে হবে।”

এতদিন প্যাকেজের আওতায় একটা দাম ধরা হতো জানিয়ে তিনি বলেন, এখন থেকে সেই প্যাকেজে স্টেন্টের দাম নির্ধারিত থাকতে হবে। যেন রোগী বুঝতে পারেন যে কোনটা সেন্টের দাম আর কোনটা হাসপাতালের খরচ। এতে রোগীর জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে এবং ভোগান্তি কমবে বলেও মনে করেন ঔষধ প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এর আগে গত ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানির তিন ধরনের স্টেন্টের দাম কমায় অধিদপ্তর। তখন ‘রেজোলিউট ইন্টেগ্রিটি’ ধরনের স্টেন্টের ভিত্তিমূল্য ৮৮০ থেকে কমিয়ে ৫০০ ডলার, রেজোলিউট ওনিক্সের দাম ১১৫০ থেকে কমিয়ে ৯০০ ডলার এবং অনিক্স ট্রকারের দাম নির্ধারণ করা হয় ৪৫০ ডলার।

এরপর ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর অধিদপ্তর আরও কয়েক ধরনের স্টেন্টের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যা কার্যকর হয় গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে। নতুন তালিকায় সর্বনিম্ন ১৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের স্টেন্টও রয়েছে। এতে প্রকারভেদে স্টেন্টের দাম সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত