Beta
বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

অনন্ত আম্বানির মুটিয়ে যাওয়া নিয়ে ট্রল

anaNTA AMABANI
[publishpress_authors_box]

গণমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় বহুল চর্চিত বিষয় অনন্ত আম্বানির তিনদিনব্যাপি প্রাক-বিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। এশিয়ার শীর্ষ এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী মুকেশ আম্বানির ছোট ছেলে হওয়ার কারণেই এ বিয়ের জাঁকজমক নিয়ে এতো সোরগোল হবে সেটাই স্বাভাবিক।

এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতে ভিড় করেছিলেন বিশ্বের নামি-দামী সব তারকা। কিন্তু এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে ট্রলের শিকার হচ্ছেন মুকেশ-নিতা আম্বানির পুত্র অনন্ত। 

আসলে ঘটনার শুরু সেই ২০২৩ সালে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাধিকা মারচেন্ট এবং অনন্ত আম্বানির বাগদানের ছবিগুলো ভাইরাল হতে থাকলে বিরূপ মন্তব্য করতে থাকেন অনেকেই। তাদের টার্গেট ছিল অনন্ত। এতো স্থুল শরীর নিয়েও কি করে এমন ‘সুন্দরী বাগিয়ে নিলেন’ এসব ছিল সেইসব মন্তব্যের সারবস্তু। বিরূপ মন্তব্যকারীদের কেউ কেউ আবার রায়ও দিয়েছেন এমন বাক্যে- ‘ধনীর দুলাল বলে কথা…’।

এবারও তাদের বিয়ে পূর্ব অনুষ্ঠান নিয়ে যখন ফেইসবুক থেকে গণমাধ্যম সব পাড়া সরগরম, ঠিক তখনই অনেকের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ালো অনন্তের মুটিয়ে যাওয়া দেহ। ‘সে এতো মোটা কেন?’, ‘টাকা হলে এমন মেয়ে পাওয়া যায়’ ইত্যাদি নানা কটাক্ষ হচ্ছে সোশাল মিডিয়া জুড়ে।  

আর এসব ট্রল এবং বডি শেইমিংয়ের পালে বাতাস লাগিয়েছে অনন্তর একটি মন্তব্য। প্রাক বিয়ের অনুষ্ঠানে মঞ্চে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে অনেক কথার সঙ্গে তিনি বলেন, ছোট থেকে তার বেড়ে ওঠা খুব নাকি সহজ ছিলনা। মঞ্চে যখন অনন্ত এ কথা বলছিলেন- তখন মুকেশ আম্বানিকে দর্শকসারিতে বসে আবেগপ্রবণ হতে দেখা যায়। চোখের জল মুছছিলেন তিনি।  

তবে বাবার আবেগ বা অনন্তের বেদনার্ত কণ্ঠের বাক্য- ‘মাই লাইফ হ্যাজ নট বিন আ বেড অব রোজেস’ নিয়েও ট্রল শুরু হয়। তরুণ নেটিজেনদের একটি বড় অংশ মজা করতে শুরু করে। তাদের দাবি- এশিয়ার এক নম্বর ধনীর সন্তানের মুখে এমন কথা হাস্যকরই না রীতিমতো বানোয়াট। 

মাঝে কিছুদিন ব্যায়াম করে শুকিয়ে গিয়েছিলেন অনন্ত। আবার ফিরেছেন আগের রূপে।

কিন্তু কি সেই বিষয় যা কিনা আম্বানি পুত্রের বিলাসবহুল জীবনের মাঝেও ‘কঠিন’ হয়ে হাজির হলো?   

২০১৬ সালে, অনন্তর মা নীতা আম্বানি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ছোটবেলা থেকেই অনন্ত আম্বানি ভয়াবহ হাঁপানির রোগী। ফলে তার চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্টেরয়েডের কারণে ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।

মাঝে অবশ্য কঠোর ব্যায়াম করে ১৮ মাসে কমিয়েছিলেন ১০৮ কেজি ওজন। যদিও ২০২৩ এর আংটি বদলের অনুষ্ঠানের সময় অনন্ত ফিরে যায় পুরোনো রূপে। তখন আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বয়ে যায় ট্রলের ঝড়। অনেকেই তখন কৌতুকের সুরে বলতে থাকে, 

“ঝরিয়ে ফেলা কিলোগুলো 

আবারও কি ফিরে এলো?”

অনন্তের মুটিয়ে যাওয়ার কারণ

এইসব বডি শেইমিং আর ট্রল করা লোকজন ধরেই নিয়েছে অতিরিক্ত জাংক ফুড অনন্তর এমন মুটিয়ে যাওয়ার কারণ। কিন্তু আসল কারণ যে তার অ্যাজমা রোগ সে নিয়ে তেমন কারও মাথাব্যথা ছিলনা। আর এবারও রাধিকার সাথে তার ছবিগুলো ভাইরাল হলে ট্রলবাজ লোকজন সেই জাংক ফুড আর পরিশ্রমহীন লাইফস্টাইলের কথাই বলতে থাকে। 

সেলিব্রেটিরাও আমাদের মতো রক্ত মাংসের মানুষ। তাদেরও হয় নানান অসুখ-বিসুখ। ফলে তাদের শরীর নিয়ে যা ইচ্ছে তাই বলে ফেলা কতটা রূচিবোধের- তা নিয়ে অবশ্য ক্ষীণ কণ্ঠে হলেও কথা উঠতে শুরু করেছে। 

ব্যায়ামি করে ওজন কমিয়ে রাধিকা মার্চেন্ট এর সঙ্গে একটি ছবিও ইনস্টাগ্রামে দিয়েছিলেন অনন্ত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাজমায় আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে ব্যায়াম করা অথবা পরিশ্রম করা বেশ কঠিন।  আর এই রোগের চিকিৎসায় দীর্ঘমেয়াদে স্টেরয়েড গ্রহণ করলে একজন মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করে, যা কিনা বাড়ায় ওজন।

পাশাপাশি এই স্টেরয়েড শরীরের পানি ধরে রাখে ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। 

অ্যাজমা অথবা হাঁপানির জন্য যে স্টেরয়েডগুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো শরীরের বিপাক ক্রিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ফলে দেখা যায়, চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর ক্ষুধার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যেতে পারে বহুগুণ।

আরও করূণ ব্যাপার হলো, স্টেরয়েডের ডোজ যত বাড়বে, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তত বাড়তে থাকবে। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই স্টেরয়েডগুলি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও দেয় বাড়িয়ে। যা আবার ওজন বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত