Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

দেহে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার, কতটা ঝুঁকিতে কেট

কেট মিডলটন।
কেট মিডলটন।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন। নিজেই খবরটি প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু তার শারীরিক পরিস্থিতি বা রোগের বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি।

এর মধ্যেই তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সবার সামনে ভবিষ্যৎ রানির শারীরিক অবস্থা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান।

ক্যান্সারের ধরন

শুক্রবার দেওয়া এক ব্যক্তিগত বার্তায় কেট মিডলটন বলেন, “জানুয়ারিতে পেটে একটি বড় অস্ত্রোপচার হয়। ধারণা করা হয়েছিল, আমার পরিস্থিতি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী নয়।”

লন্ডন ক্লিনিকে হওয়া কেটের ওই অস্ত্রোপচার সফলও হয়েছিল। ১৩ রাত হাসপাতালে কাটিয়ে ২৯ জানুয়ারি বাড়ি ফিরেন তিনি। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পরে করা পরীক্ষায় দেখা যায়, ক্যান্সার কোষ রয়েছে কেটের শরীরে।

যদিও ৪২ বছর বয়সী কেট মিডলটন কোন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে কেনসিংটন প্যালেস জানিয়েছে, কেটের শরীরে কোন ধরনের ক্যাান্সার এবং তা কী ধাপে রয়েছে, সে বিষয়ে আর কোনও তথ্য প্রকাশ করা হবে না।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য প্রিন্সেস অব ওয়েলস কোন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছেন, সেই বিষয়েওি বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। সাধারণত ক্যান্সার শনাক্ত করতে রক্ত পরীক্ষা, স্ক্যান ও বায়োপসি করা হয়। এর মধ্যে বায়োপসি এমন একটি মেডিকেল প্রক্রিয়া, যেখানে শরীর থেকে ছোট একটি নমুনা নেওয়া হয়। তারপর সেটা মাইক্রোস্কোপের নিচে নিয়ে দেখা হয়, সেখানে কোনও অস্বাভাবিক কোষ আছে কি না।

কেট জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার দেখা ক্যান্সার ধরা পড়েছে।

স্বামী প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে কেট মিডলটন।

চিকিৎসা

কেট মিডলটন আরও জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা তাকে ক্যান্সার প্রতিরোধে কেমোথেরাপি নিতে বলেছেন।

কেমোথেরাপি এক ধরনের চিকিৎসা, যেখানে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করা হয়। বেশ কয়েক ধরনের কেমোথেরাপির ওষুধ বাজারে আছে। এর সবগুলো প্রায় একইভাবে কাজ করে। ওষুধগুলো ক্যান্সার কোষ পুনরুৎপাদন বন্ধ করে, তাতে করে সেগুলো বৃদ্ধি পাওয়া বা শরীরে ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়।

কেট জানিয়েছেন, চিকিৎসার প্রাথমিক ধাপে রয়েছেন তিনি।

গার্ডিয়ানের হিসাব নিকাশ বলছে, কেট কেমোথেরাপি শুরু করেছেন ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। এখনও তার চিকিৎসা চলছে। তবে কখন চিকিৎসা শেষ হবে সেটা নির্ভর করবে চিকিৎসকের পরামর্শের ওপরই।

নিজের বার্তায় কেট আরও লিখেছেন, গত কয়েকটা মাস তার ও পরিবারের জন্য খুব কঠিন ছিল। তারপরও মনোবল দৃঢ় ছিল এবং মূল নজর ছিল সুস্থ হওয়ার দিকেই।

তিনি বলেন, “আমি ভালো আছি। যা কিছু আমাকে সুস্থ হতে সাহায্য করবে সেগুলোতে মনোযোগ দিয়ে প্রতিদিন আরও শক্তিশালী হচ্ছি। মানসিক, শারিরীক ও আত্মিকভাবে।”

যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য পরবর্তী রানি আরও জানান, কাজে ফেরার দিকে মনোযোগ দিতে চাইছিলেন তিনি, কিন্তু আপাতত শুধু সুস্থ হওয়াতেই পূর্ণ গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।

রাজা তৃতীয় চার্লসও ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সতর্কবার্তা

চলতি বছরের শুরুতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেট মিডলটনের শ্বশুর রাজা তৃতীয় চার্লস। সেই সময়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) ওয়েবসাইটে তার রোগ সম্পর্কে জানতে অনেক বেশি অনুসন্ধান চালানো হয়।

এনএইচএসের প্রধানের মতে, কেটের ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি ‘হতবাক’ করার মতো। কিন্তু জনসম্মুখে নিজের অবস্থা নিয়ে কথা বলার জন্য কেটের প্রশংসা করেন তিনি।

এনএইচএস ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী আমান্ডা প্রিচার্ড বলেন, “এই বিষয়ে কথা বলা সত্যিই সাহসের। এর ফলে অস্বাভাবিক কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই অন্যরা পরীক্ষা করে দেখবে।”

তবে রাজা চার্লস বা কেট মিডলটন, দুজনেরই অন্য রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে ক্যান্সার শনাক্ত হয়।

বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, প্রস্টেট বৃদ্ধি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তৃতীয় চার্লস। সেই সময়েই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। এদিকে কেট মিডলটনও জানুয়ারিতে পেটের একটি অস্ত্রোপচার করার পরে জানতে পারেন ক্যান্সারের খবর। যদিও কেন তার পেটে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল, তা জানানো হয়নি।

যুক্তরাজ্যে ক্যান্সার

ম্যাকমিলান ক্যান্সার সাপোর্টের তথ্য বলছে, প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে ৩ লাখ ৯৩ হাজার মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। ২০২১ সালে প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যুর কারণ ছিল ক্যান্সার।

যে কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। তবে তরুণ বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়স ৫০ বা তার বেশি হওয়ার পর আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ে। তবে গত তিন দশকে ৫০ বছরের নিচে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়েছে।

কমবয়সীদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা যেখানে ১৯৯০ সালের ১৮ লাখ ২ হাজার ছিল, ২০১৯ সালে তা বেড়ে ৩২ লাখ ৬ হাজার হয়েছে। এই সময়ে এ রোগে ৩০, ৪০ বা আরও কম বয়সী প্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু বেড়েছে ২৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত