Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

৭ খুন : বিচার ৩ বছরে শেষ হলেও আপিলে ঝুলছে ৬ বছর

অপহরণের তিন দিন পর ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সাতজনের লাশ।
অপহরণের তিন দিন পর ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সাতজনের লাশ।

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার বিচার বিচারিক আদালতে তিন বছরে শেষ হলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটি ঝুলে আছে প্রায় ছয় বছর ধরে।

তবে আপিল বিভাগে নতুন বিচারক নিযুক্ত হওয়ায় দ্রুত মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘটবে বলে আশা করছেন আইন কর্মকর্তারা। 

এক দশক আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে এক কাউন্সিলর এবং এক আইনজীবীসহ সাতজনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

এই হত্যাকাণ্ডে র‌্যাবের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল।

হত্যাকাণ্ডের তিন বছরের মাথায় দ্রুত বিচার আদালত আসামিদের দোষি শনাক্ত করে রায় ঘোষণা করে। এরপর মামলাটি হাইকোর্টে গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিচার করে এক বছরের মধ্যে রায় ঘোষণা হয়। বিচারে দুটি ধাপ দ্রুত গতিতে এগোলেও ঝুলে যায় আপিল বিভাগে।

বিচারক সংকট, বিশাল মামলার জট, আর বছর অনুসারে আপিল বিভাগ মামলার বিচার করায় এ মামলাটি এখনও শুনানির জন্য আসেনি। তবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, শিগগিরই এ মামলাটি শুনানি হবে।

কবে নাগাদ হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মামলাটি যেহেতু আপিল বিভাগে আছে, নতুন আরও তিনজন বিচারপতিও নিয়োগ পেয়েছেন। আশা করি, আপিল বিভাগে এখন মামলা নিষ্পত্তিতে গতি পাবে।

“তবে দিনক্ষণ করা বলা যাবে না। আপিল বিভাগের তালিকায় যখন মামলাটি উঠবে, তখনই আমরা শুনানি করব। শুনানির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।”

তারেক সাঈদ মোহাম্মদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল সাতজনকে। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল ছয়জনের এবং ১ মে বাকি একজনের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম।

মামলার তদন্তে উঠে আসে, আরেক কাউন্সিলর নুর হোসেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নজরুলকে ঘায়েল করতে র‌্যাবকে দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। নজরুলকে অপহরণের সময় দেখে ফেলেছিলেন আইনজীবী চন্দন ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম। তখন তাদেরও হত্যা করা হয়।

এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় আলাদা দুটি মামলা করেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নুর হোসেন।

দুই মামলার বিচার একসঙ্গে হয়। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করে।

পরে মামলাটি হাইকোর্টে এলে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় হয়। অন্যান্য আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় হাই কোর্ট।

সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে সাজাপ্রাপ্তরা, যা এখন শুনানির অপেক্ষায় আছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত