Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
Beta
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চেম্বারে অ্যানেস্থেসিয়া নয়

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) স্বীকৃত নন এমন কোনও অবেদনবিদ বা অ্যানেস্থেসিওলজিস্টকে দিয়ে এখন থেকে আর অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত কাজ করানো যাবে না।

খৎনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর জন্য একটি জরুরি নির্দেশনা জারি করে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই লাইসেন্স প্রাপ্ত বা নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চিকিৎসকের চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া যাবে না। আবার যিনি অ্যানেস্থেসিয়া দেবেন তাকে অবশ্যই বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ হতে হবে।

এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কয়েকটি শর্তও দেওয়া হয়েছে।

এগুলো হলো, বেসরকারি ক্লিনিক/ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের কপি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা।

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এমন একজন তথ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দিতে হবে, যার কাছে ওই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ওই ব্যক্তির ছবি ও মোবাইল নম্বরও দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদাভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স লাগবে। একটির লাইসেন্স ব্যবহার করে অন্যটি কোনোভাবেই পরিচালনা করা যাবে না।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, শুধু সে ক্যাটাগরিতেই নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। এসব পরীক্ষার জন্য অবশ্যই নির্ধারিত যোগ্যতার প্যাথলজি,মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও বলছে, বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সব শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

লাইসেন্স পাওয়া হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচার বা এ সংক্রান্ত কাজের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

দেশের সব বেসরকারি নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে এবং সবশেষ নিবন্ধিত/লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই অস্ত্রোপচার কক্ষের নির্দিষ্ট শর্ত মেনে চলতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হাসান মো. মঈনুল আহসানের সই করা এই নির্দেশনা দেশের সব বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক, জেলা সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতিকে পাঠানো হয়েছে।

ডা. আবু হাসান মঈনুল আহসান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান বরাবরই কঠোর। একইসঙ্গে বিদ্যমান স্থাপনার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের নির্দেশনায় এই আদেশ জারি করা হয়েছে।”

এর আগে বিকালে গাজীপুরের রাজন্দ্রপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন , “আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু অসাধু মানুষ সরকারের কোনো রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য যত্রতত্র নামমাত্র  হাসপাতাল, ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে এগুলো আর চলতে পারবে না।”

দেশের ১ হাজার ২০০টির বেশি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিবন্ধন নেই বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এরকম অনিবন্ধিত সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্র দ্রুত বন্ধ করা হবে। আর, আজকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিচালক (প্রশাসন) কর্তৃক স্বাক্ষরিত দশটি বিশেষ নির্দেশনাসহ একটি অফিস আদেশ করে দিয়েছি। এই অফিস আদেশ প্রত্যেকটি প্রাইভেট মেডিকেল/ক্লিনিক/ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অবশ্যই মেনে হাসপাতাল চালাতে হবে। এটির অমান্য হলেই নিবন্ধন বাতিলসহ কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।”

সম্প্রতি রাজধানীর সাঁতারকূলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই একই ঘটনা ঘটেছে মালিবাগের বেসরকারি একটি রোগ নিরূপণ কেন্দ্র জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে।

মঙ্গলবার রাতে আয়হামের খৎনা করা হয় জেএস ডায়াগনস্টিকে। পরিবারের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া অর্থাৎ পুরোপুরি অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশুটিকে। পরে আর তার জ্ঞান ফেরেনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত