টাঙ্গাইলের নুর নাহারের বয়স ছিল ১৪ বছর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো সে। ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়েছিল মেয়েটির; ৩৪ বছর বয়সী প্রবাসী ধনী রাজিব খানের সঙ্গে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই যোনিপথে রক্তপাত হয় কিশোরী নুর নাহারের; এ কথা জানান পরে নুর নাহারের নানা লাল খান।
স্বামী হিসেবে রাজিব ওই কিশোরীর কোনো চিকিৎসা করায়নি। উল্টো এমন অবস্থাতেই শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে নুর নাহারকে। মেয়েটির অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে তাকে টাঙ্গাইলের এক ক্লিনিকে আনা হয়। সেখান থেকে পরে নেওয়া হয় মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা নয়। শেষ পর্যন্ত যৌনাঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ২৫ অক্টোবর মারা যায় নুর নাহার।
ভারতে কর্নাটক হাইকোর্টের বিচারপতিরা এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে কঠোর অবস্থান দেখিয়ে মন্তব্য করেন, বিবাহ মানে পাশবিক প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার লাইসেন্স নয়।
খিল দেওয়া দরজার ওপাশে নারী-পুরুষের দাম্পত্য সম্পর্কে ভর করা সেই পাশবিক প্রবৃত্তি সিনেমার ক্যানভাসে দেখাতে চেয়েছেন নূরুল আলম আতিক। তার গল্প, চিত্রনাট্য আর পরিচালনায় পেয়ারার সুবাস সিনেমা দেখিয়েছে বৈবাহিক ধর্ষণের বিভৎস যন্ত্রণা।
সিনেমা নির্মাণের গল্প
আট বছর আগে ২০১৬ সালে শুটিং শুরু করেছিল পেয়ারার সুবাস টিম। নানা ঝামেলা এবং শুটিংয়ের তারিখ পেছাতে পেছাতে শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালে শেষ হয় এই সিনেমার কাজ। এরপর আবার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করতে আরও তিন বছর চলে যায়।
২০২৩ সালে ৪৫তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় পেয়ারার সুবাস। এরপর ২০২৪ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি এক যোগে ২৭ প্রেক্ষাগৃহে আসে সিনেমাটি; ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় অস্ট্রেলিয়াতেও। ২১ মার্চ রাত থেকে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকিতে এসেছে পেয়ারার সুবাস।
প্রথম মুক্তির তারিখ থেকে হিসেব করলে দুইমাস পার করেও স্ক্রিন, দর্শকের আলোচনা এবং খবরে রয়েছে পেয়ারার সুবাস।
সিনেমার নামকরণ
শুধু পরিচালনা নয়, সিনেমার গল্পও লিখেছেন নূরুল আলম আতিক। চিত্রনাট্যও তার লেখা। সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো পেয়ারা বেগম। পর্দায় জয়া আহসান হয়ে উঠেছেন পেয়ারা বেগম। এই পেয়ারার নামেই সিনেমার নাম পেয়ারার সুবাস। এর ইংরেজি টাইটেল দ্য সেন্ট অব সিন। এই সিনেমায় অনুঘটক হয়েছে গন্ধ। ঘাম, কাম এবং পাপের গন্ধ আছে সিনেমা জুড়ে। তাই এর নামকরণ শৈল্পিক এবং সার্থক। সিনেমা শেষে নামধাম স্ক্রল করে চলার সময় দেখা যায় শিরোনাম দিয়েছেন খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।
কলম্বিয়ার সাংবাদিক, ঔপন্যাসিক এবং বন্ধু প্লিনিও এ্যাপুলেইও মেন্দোজা স্প্যানিশ সাহিত্যিক গ্যাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার মলাটবদ্ধ আকারে প্রকাশ করেছিলেন। এই বইয়ের নাম ইংরেজিতে ‘ফ্রাগরেন্স অব গুয়াভা’। বইটির অনুবাদ করেন অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস এবং বাংলা নামকরণ করেন পেয়ারার সুবাস। এই গ্রন্থের সঙ্গে সিনেমার এছাড়া কোনো যোজসাজস নেই অবশ্য।
গন্ধের গল্প পেয়ারার সুবাস
প্রথম রাতে ঘরে কফিনের বাক্স দেখে নতুন বউ শিউরে ওঠে। স্বামী জানায়, এটাই তার ব্যবসা। অথচ বিয়ের সময় মুনশি বলেছিল তার সুগন্ধীর ব্যবসা আছে। পেয়ারা বেগম বুঝতে পারে টাকার লোভে মামা তাকে এই কফিন ব্যবসায়ী বয়স্ক মুনশির সঙ্গে বিয়ে দিয়েছে। আলমারিতে আয়না দেখতে গিয়ে জায়গাটা খালি দেখে হতচকিত পেয়ারা বেগমকে আরও চমকে দিয়ে ছোট জানালার ওপাশ থেকে এক কিশোর দাঁত বার করে বলে ওঠে, “নতুন বউ ঠকছে।”
এদিকে বাবার বিয়ের কথা শুনে জ্ঞান হারায় যুবতী মেয়ে। মুনশি নতুন বউকে ভাত মাখিয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়; তাতে মেয়ে আরও ক্ষুব্ধ হয়। অপরদিকে বাবা হিসেবে মুনশিকে দেখায় অসহায়। তবে সেসব কাটিয়ে মুনশি মন দেয় নতুন বউকে ভোগে। পেয়ারা বেগম প্রস্তুত ছিল না। উপরন্তু মুনশির শরীরে ঘাম আর কাঁঠালের গন্ধে বমি আসে তার। এসবে বয়স্ক মুনশির পৌরুষত্বে ঘা লাগে; ঝাঁপিয়ে পড়ে পেয়ারা বেগমের উপর। পরের রাতেও চলে এই বলপ্রয়োগ।
শারীরিক ও মানসিক ভাবে আতঙ্কিত হয়ে যায় পেয়ারা বেগম। কখনও পালাতে চায়। কখনও কফিনে লুকিয়ে থাকে। ছোট অন্ধকার ঘরে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে ওঠে। রান্নাবান্না কাজের সহায়িকা সরলা নতুন বউকে পরিপাটি করতে গিয়ে অনুযোগের স্বরে বলে ওঠে, “এসব গন্ধ গন্ধ খেলার মধ্যে আমি আর নাই।”
এক সময় বৃষ্টি নামে। পেয়ারা বেগম বৃষ্টির ঘ্রাণে উঠে বসে। এদিকে বাড়িতে আসে যুবক হাশেম। মুনশির মেয়ে খোঁজ লাগিয়ে জেনে যায়, হাশেম আর পেয়ারা বেগম একই গ্রামের লোক। পেয়ারা বেগমের হাসি, বিষাদ এবং বৃষ্টি ভেজা মনে কিছু একটা চলতে থাকে। গোপনে ধুতুরা ফল কেনার পর থেকে পেয়ারা বেগমের পানের প্রশংসা ছড়িয়ে যায়। বয়স্ক মুনশির হুট করে গন্ধ-রোগ হয়; পানিতে গন্ধ পায়, নিজের গায়েও গন্ধ পায়। বন্যায় ভেসে যাওয়া চরাচরে পেয়ারা বেগম, হাশেম এবং মুনশির গন্ধ গন্ধ খেলার শেষ পরিণতি কী মুক্তি নাকি বড় কোনও পাপের আভাস দেয়?
সিনেমার কারিগরি
পেয়ারা বেগম চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। মেকআপহীন চেহারা, সাদামাটা জামা মোট কথা গ্ল্যামার ছাড়া একটি চরিত্রে কাজ করেছেন তিনি। মুখের নির্যাতনের দাগ, ভয় ক্লোজ শটে এসেছে। সেসব অভিব্যক্তিতে অবশ্য জয়া আহসানের মতো পাকা অভিনেত্রী কোনো কমতি রাখেননি। ঝর ঝর বৃষ্টিতে জানালার শিকের ভেতর দিয়ে জয়া আহসানের বিহ্বল মুখ দেখতে অপূর্ব লাগে।
সিনেমার প্রথম ৪৫ মিনিট দর্শকের মনকে দাবিয়ে রাখবে। বয়স্ক মুনশির নতুন বউয়ের সঙ্গে জোরাজুরি দেখে দর্শকের চোখ সরু হবে, রাগ হবে।
৪৫ মিনিটের মাথায় ট্রেনের উপরে হলুদ জামা পরে কবুতর হাতে হাশেমকে দেখে দর্শকের মনে হবে এতক্ষণে বিশুদ্ধ বাতাসে ফুসফুস ভরে গেল। হাশিম চরিত্রে ছিলেন আহমেদ রুবেল। পেয়ারার সুবাসে আহমেদ রুবেলের চরিত্রে বাড়তি অভিনয় শৈলী দেখানোর সুযোগ ছিল না; তারপরও অভিজ্ঞ এই শিল্পী তার পর্দা উপস্থিতিতে অবধারিত ভাবেই সাবলীল ছিলেন। পেয়ারার সুবাস সিনেমা প্রদর্শনীর সন্ধ্যায় আহমেদ রুবেলের চলে যাওয়া এক বিশাল আক্ষেপের জন্ম দিয়েছে শিল্পী ও দর্শকদের মনে। পেয়ারার সুবাস যতবারই যে কেউ দেখবেন ততবারই আহমেদ রুবেলের পর্দা উপস্থিতিতে মন হু হু করবে।
বয়স্ক মুনশির চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। এমনিতে ঠিকঠাক ধরনের মানুষ কিন্তু ভেতরে ভেতরে অতিকামিতা চরিত্রে তারিক আনাম খানকে আগেও দেখা গেছে; ঘেটুপুত্র কমলা সিনেমায়। তারিক আনাম খান ৭০ বছর ছুঁয়েছেন। তার অভিনয়ে ঘাটতি নেই। এর সঙ্গে তার চোখমুখ এবং শারীরিক ফিটনেস প্রশংসাযোগ্য। পরের প্রজন্মের অভিনেতাদের অনেকের এমন ফিটনেস নেই।
সরলা চরিত্রটিকে দেখার মতো করে তুলেছে দিহানের অভিনয়। সরলার যৌবন ভরা শরীরে শাড়ি পরার ধরন, হতাশা অথবা আকাঙক্ষা, আবার সিগারেট খাওয়া সবকিছু দিহানের অভিনয় গুণেই দর্শকের নজরে পড়বে।
এর বাইরে আর সবাই অভিনয় ও অভিব্যক্তিতে কোনো অতিরঞ্জন ছাড়াই যথাযথ কাজ করেছেন।
সিনেমায় কালার গ্রেডিং করেছেন দেবজ্যোতি ঘোষ এবং শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন মাহবুব উল ওয়াদুদ রেইনী। ডিওপি অর্থাৎ প্রধান চিত্রগ্রাহক হলেন দুজন – অয়ন রেহাল এবং কামরুল আহসান লেনিন। রূপসজ্জার কাজ করেছেন মো. ফারুক। পর্দায় আলো-আঁধারির খেলা, জয়া আহসানের অভিব্যক্তি, নোনা ধরা বাড়ি, শীতল ধোঁয়া মেশা জল, টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার শব্দ, আহমেদ রুবেল-জয়া আহসানের ঘরের চিকন ফাঁকা দিয়ে চোখাচোখি, মরা শরীরের জলে ভাসার দৃশ্যে যে নিরীক্ষা ও শৈল্পিকতা তা সম্ভব হয়েছে এই টিমের কারণে।
প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমা পেয়ারার সুবাস
কিছুদিন আগে বক্স অফিসে সাড়া ফেলা অ্যানিমেল সিনেমাতে বৈবাহিক ধর্ষণের দৃশ্য ছিল। ববি দেওলের অভিনয় গুণে এই দৃশ্যে যৌনলালসা দেখে দর্শকও বিব্রত হয়ে পড়ে; চলে আলোচনা-সমালোচনা। চরিত্রহীন কিংবা পাষণ্ড স্বামীর হাতে স্ত্রীর নির্যাতন দেশের নাটক-সিনেমায় বহুভাবে দেখানো হয়েছে। স্বামীর স্ত্রীকে যৌননিপীড়নও হয়তো অনেক সময় এসেছে পর্দায়-নাটকে। তবে সেসব দৃশ্য নিপীড়ন কিংবা অসুখী দাম্পত্য যতটা তুলে ধরেছে বৈবাহিক ধর্ষণকে আলাদা করে কোনোভাবেই আলোচনায় আনতে পারেনি। পেয়ারার সুবাস সিনেমার গল্প চেয়েছে এই আলোচনা উঠে আসুক।
সিনেমার প্রচারণায় এসে নূরুল আলম আতিক অনেক সময়ই বলেছেন, এই সিনেমা ১৮ বছরের কম বয়সীদের উপযোগী নয়। যদিও চরকি প্লাটফর্মে এই সিনেমা ১৬+ বলা আছে। আর প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে আনকাট অনুমোদন পেয়েছিল পেয়ারার সুবাস।
সিনেমায় কাম আছে, গালি আছে, রক্ত আছে। এসব আরও বাণিজ্যিক সিনেমাতেও থাকে। বাংলাদেশে ১৮+ তকমা নিয়ে সিনেমা চালানো সহজ নয়। এরপরও পেয়ারার সুবাস টিমের প্রচারণার এই ধরন বেশ পরিণত। বয়স্ক মুনশির জোর করে স্ত্রী পেয়ারা বেগমকে ভোগ করার দৃশ্যায়নে ক্যামেরার ফ্রেমও বেশ পরিণত ছিল। অনেক বেশি না দেখিয়েও বন্ধ ঘরের একটি বিছানায় কী পাশবিকতা চলছে তা দর্শক রন্ধ্রে রন্ধ্রে টের পাবেন; অস্বস্তি, বিরক্তি এবং যন্ত্রণায় ভুগবেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া তো জরুরি, তবে একই সঙ্গে প্রাপ্তমনস্ক হতে হবে বৈবাহিক ধর্ষণ বুঝতে।
পেয়ারার সুবাসে গল্পে খুব বেশি মোড় নেই; তাই ধারাবাহিকতায় বড় কোনো বিপর্যয়ের সুযোগই নেই। এরকম গল্প দর্শক জানেন, কিন্তু পেয়ারার সুবাস যেভাবে দেখিয়েছে তেমন মগজ চিন চিন করা অনুভূতিতে দেখা হয়নি। বিশেষ করে প্রথম ৪৫ মিনিট যে ‘ডার্ক’ আবহ ছিল পর্দা জুড়ে তাতে দর্শক মানসিক লড়াইয়ের মুখে পড়বেন। দর্শক বুঝতে পারবেন, এই সিনেমা উপভোগের সিনেমা নয়। সোশাল মিডিয়াতে অনেক দর্শক সিনেমার রিভিউ করতে গিয়ে বলেছেন, এতে কোনো গল্প নেই, ধারাবাহিকতা নেই। এই রিভিউয়ের প্রভাব পড়েছে আইএমডিবিতেও; পেয়ারার সুবাসের আইএমডিবি রেটিং ৪.৪/১০। বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে যে রাখঢাক ও অস্বীকৃতি রয়েছে সমাজে এসব রিভিউ তারই প্রতিফলন হয়ে এসেছে।
বাংলাদেশে বৈবাহিক ধর্ষণ ধারণা
১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ ম্যারিটাল রেইপ বা বৈবাহিক ধর্ষণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, কানাডা, ইসরায়েল, ফ্রান্স, সুইডেন, নরওয়ে, পোল্যান্ড সহ অনেক দেশেই বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ বলে গণ্য হয়।
জাতিসংঘের ২০১৩ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, চীন, ইন্দোনেশিয়ার ২৪ শতাংশ স্বামীরা শারীরিক মিলনে স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না এবং তারা এসব ক্ষেত্রে জোর করে থাকে। এদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ পুরুষ যৌন সঙ্গমে অবাধ্য স্ত্রীকে শাস্তি দিতেও জোর করে শারীরিক সম্পর্ক ঘটায়।
১২ হাজার নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, ৮৭ শতাংশ নারী জানায় তারা বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার।
পাকিস্তানে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ২০০৬ সালে স্ত্রীকে সঙ্গমে বাধ্য করাকে অপরাধ ঘোষণা করা হয়। আর এমন অপরাধে ২৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিও আছে।
বাংলাদেশের ধর্ষণ সংক্রান্ত ধারা দণ্ডবিধি ৩৭৫, ৩৭৬ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ -এর ধারা ৯ -এর কোথাও বৈবাহিক ধর্ষণের কথা উল্লেখ নেই। দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞায় বৈবাহিক ধর্ষণ উপেক্ষিত রয়েছে।
২০২০ সালে একাত্তর টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ বার্তাকক্ষ সম্পাদক ওয়াহিদা আফসানার পক্ষে আইনজীবী মো. জাহিদ চৌধুরী জনি একটি নোটিস পাঠান আইন সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরবার।
ভয় দেখিয়ে, প্রতারণার মাধ্যমে অথবা যে কোনোভাবে সম্মতি ছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সঙ্গমকে বৈবাহিক ধর্ষণ স্বীকৃতি দিয়ে আইন সংশোধন করতে বলা হয় ওই নোটিসে; যেন ঔপনিবেশিক শাসনকালের ভিক্টোরিয়ান নৈতিকতা মুক্ত হতে পারে আজকের সমাজ।
কিন্তু বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের স্বীকৃতি দেয়নি।