Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল চালু হলে কতটা সুফল মিলবে

পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালে পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু করেছে 'রেড সি গেইটওয়ে'। ফাইল ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of আসিফ সিদ্দিকী

আসিফ সিদ্দিকী

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) দিয়ে পণ্য ওঠানামার জন্য সৌদি আরবভিত্তিক বন্দর পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ‘রেড সি গেইটওয়ে’কে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আগামী এপ্রিল নাগাদ বিদেশি এই অপারেটর পণ্য ওঠানামার কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কোনও সমুদ্রবন্দরে প্রথমবার পণ্য ওঠানামার কাজে যুক্ত হচ্ছে বিদেশি অপারেটর। এতে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাওয়ার আশা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

এপ্রিলে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শুরুতে কেবল ক্রেনযুক্ত বা গিয়ারড কন্টেইনার জাহাজ ভিড়িয়েই পণ্য ওঠানামা শুরু করবে রেড সি গেইটওয়ে কর্তৃপক্ষ। কারণ পণ্য ওঠানামার সবচেয়ে আধুনিক যন্ত্র ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ স্থাপিত হয়নি পিসিটিতে। এপ্রিলের মধ্যে সেই যন্ত্র যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ফলে প্রাথমিকভাবে জাহাজের ক্রেন দিয়েই পণ্য ওঠানামা শুরু হবে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ারলেস বা ক্রেনবিহীন কন্টেইনার জাহাজ আসার পরিমাণ বেড়েছে। এ ধরনের কোনও জাহাজ এখনই পিসিটিতে ভিড়তে পারবে না। ফলে পিসিটিতে পুরোদমে কাজ শুরু হতে বা এর সুফল পেতে আরও এক বছর অপেক্ষায় থাকতে হবে বলে ধারণা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের পাশে নির্মিত পিসিটির তিনটি জেটিই কন্টেইনার ওঠানামার জন্য নির্ধারিত। ফলে কন্টেইনার ছাড়া বাল্ক বা খোলা পণ্যবাহী জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা হবে না এই টার্মিনালে। কিন্তু যখন ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’সহ আধুনিক সব যন্ত্র যোগ হবে, তখন পিসিটি বন্দরে থাকা ১৯টি জেটি থেকে এগিয়ে থাকবে বলিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তিন কারণে নজর কাড়বে পিসিটি

বন্দর সংশ্লিষ্টদের মতে, তিন কারণে পিসিটি দেশি-বিদেশি জাহাজ পরিচালনাকারীদের নজর কাড়বে। একটি হচ্ছে, জাহাজ ভেড়াতে অগ্রাধিকার পাওয়া। দ্বিতীয়ত, অন্য যেকোনও জেটির চেয়ে পিসিটির জেটির পাশে পানির নাব্যতা বেশি; ফলে সবচেয়ে বড় জাহাজও এখানে ভিড়তে পারবে। তৃতীয়ত, বিদেশি অপারেটর হিসেবে আর্ন্তজাতিক শিপিং লাইনগুলোর সঙ্গে কানেকটিভি। এছাড়া বহির্নোঙর থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বে জেটির অবস্থানও পিসিটিকে অন্য জেটিগুলার চেয়ে এগিয়ে রাখবে।

সিঙ্গাপুর পোর্টে কর্মরত এক শীর্ষ কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বাংলাদেশি বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটরদের থেকে পিসিটি এগিয়ে থাকবে। এর কারণ– জেটিগুলো তাদের নিজেদের, যন্ত্রপাতি নিজেদের, অপারেশন নিজেদের। আর জাহাজ বরাদ্দ তাদেরই এখতিয়ার। ফলে জাহাজ বরাদ্দে পিসিটি এগিয়ে থাকবেই।

“সিঙ্গাপুর পোর্টে আমরা দেখেছি ভলিউম ডিসকাউন্ট বা রিবেটের বিষয়। বিভিন্ন জাহাজ মালিকদের সাথে সমঝোতা অনুযায়ী টার্গেট পূরণ করতে পারলে বিশেষ ডিসকাউন্টে জাহাজ ভেড়ানোর সুযোগ থাকে; রেড সি গেইটওয়ে সেই কৌশল প্রয়োগ করবে। বাংলাদেশি অপারেটররা চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে চুক্তি থাকায় ইচ্ছে থাকলেও সেটি প্রয়োগ করতে পারেননি।”

তিনি বলেন, “বন্দরের সাথে রেড সির চুক্তিতে কী আছে জানি না। তবে বন্দরের ট্যারিফ যদি ঠিক থাকে তাহলে সর্বনিম্ন ট্যারিফে মায়ের্কস লাইন, এমসিসির মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানির সাথে চুক্তি করবে। ফলে তাদের জাহাজ পিসিটিতে সরাসরি ভিড়তে পারবে।”

চট্টগ্রাম বন্দরের মেরিন বিভাগের এক পাইলটের মতে, “চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে কর্ণফুলী নদী দিয়ে এনসিটি, সিসিটির নদী পথের দূরত্ব ১১ নটিক্যাল মাইল। কিন্তু পিসিটির দূরত্ব ৮ নটিক্যাল মাইল। ফলে তিন নটিক্যাল মাইল সময় সাশ্রয় হবে। আর কিছুটা কম জোয়ারের পানিতে পিসিটিতে জাহাজ প্রবেশের সুযোগ থাকবে।”

জাহাজ ভেড়াতে অগ্রাধিকার পাবে পিসিটি

চট্টগ্রাম বন্দরে এখন জাহাজ ভেড়ানোর জন্য বন্দরের বার্থিং কোটার নিয়ম মেনে জাহাজ পরিচালনাকারীর চাহিদা দেখা হয়। এরপর কাঙ্ক্ষিত জেটি খালি থাকলে সেখানে জাহাজটি ভেড়ার অনুমতি দেয় বন্দরের মেরিন বিভাগ।

কিন্তু পিসিটি হচ্ছে বিদেশি অপারেটর দ্বারা লিজে পরিচালিত। ফলে সেখানে জাহাজ ভিড়তে রেড সি গেইটওয়ে কর্তৃপক্ষের অগ্রাধিকার থাকবে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেরিন বিভাগের এক কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “জাহাজ ভেড়াতে রেড সির এখতিয়ার থাকবে বেশি। একটি জাহাজ ডেডিকেটেডলি তারা ভেড়াতে পারবে। এর বেশি হলে তারা বন্দরকে অবহিত করবে। তাদের নিজস্ব জাহাজ ভেড়ার পর অন্য জাহাজ সেখানে ভেড়ার সুযোগ পাবে।”

তিনি বলেন, “১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ পিসিটিতে ভেড়ানোর জন্য তো আমরা ইতোমধ্যে সার্কুলার দিয়েছি, আর সাড়ে নয় মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে এনসিটি, সিসিটিতে।”

পুরোদমে চালু হতে এক বছর

সেনাবাহিনীর সহায়তায় ১ হাজার ২২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পিসিটি নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০১৭ সালে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতা শেষে ২০১৯ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। এরপর নির্মাণ শেষ হয় ২০২২ সালে।

টার্মিনালে মোট তিনটি জেটি আছে, যার দৈর্ঘ্য ৫৮৪ মিটার। এছাড়া একটি ২০৪ মিটারের ডলফিন জেটি ও ৮০ হাজার বর্গমিটার ইয়ার্ড নির্মিত হয়েছে। এই জেটিতে ২শ’ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যাবে।

রেড সি গেইটওয়ের প্রস্তাবে বলা আছে, পিসিটি পরিচালনায় ২৪ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দুই হাজার ৬৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে)। নিজেদের অর্থে যন্ত্রপাতি কিনে ২২ বছরের জন্য এই টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি করবে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে কিউজিসি, রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ অনেক যন্ত্রপাতি তাদের সংযোজন করতে হবে। পুরোদমে যন্ত্রপাতি সংযোজন করা গেলে বছরে পাঁচ লাখ একক কন্টেইনার ওঠানামা সম্ভব হবে পিসিটিতে।

তবে আগামী এক বছরে সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, পিসিটিতে ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ স্থাপন করতেই সময় লাগবে এক বছরের বেশি। ততদিন পর্যন্ত ক্রেনযুক্ত জাহাজ দিয়েই পণ্য ওঠানামা করতে হবে।

অবশ্য পোর্ট অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আট মাস পর ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ যুক্ত করে পণ্য ওঠানামা শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী তারা।

ওই কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আট মাস পর্যন্ত আমরা গিয়ারড জাহাজ দিয়ে পণ্য ওঠানামা করব। এরপরই ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ যুক্ত করে পণ্য ওঠানামা পুরোদমে শুরু করতে পারব।”

পিসিটিতে জাহাজ ভেড়াতে বেশি সময় লাগবে?

বহির্নোঙরে খুব কাছে অবস্থান হলেও পিসিটিতে জাহাজ ভেড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু কারিগরি জটিলতা আছে বলে মনে করছেন বন্দরের পাইলটরা। তাদের মতে, এনসিটি, সিসিটির তুলনায় পিসিটিতে জাহাজ ভেড়াতে একটু বেশি সময় লাগবে।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক পাইলট সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এনসিটি, সিসিটিতে জাহাজ ভেড়ানো হয় লিনিয়ার পদ্ধতিতে। অর্থ্যাৎ দুটি টার্মিনালের একটু উজানে গিয়েই জাহাজ জেটিতে ভেড়ানো সহজ। কারণ দুটি টার্মিনালের সামনেই কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা বেশি এবং সোজা।”

“বিপরীতে পিসিটির অবস্থান এমন যে, কর্ণফুলী নদীর একটি বাঁক পার হয়েই টার্মিনালটির অবস্থান। ফলে একটি জাহাজ কোনও বাঁক পার হওয়ার সাথে সাথেই ঘুরতে পারে না। অনেকটুকু সামনে বা উজানে গিয়ে ঘুরতে হবে। এই ঘুরতে গিয়ে জেটিতে জাহাজ ভেড়াতে বাড়তি সময় লাগবে,” বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর কী বলছে

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী গতমাসে চট্টগ্রামে এসে ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী এপ্রিলেই পিসিটিতে পণ্য ওঠানামা শুরু হবে। সেই লক্ষ্যে প্রথম ধাপের যন্ত্রপাতি জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। পৌঁছার পর সেগুলো সংযোজন করতে এপ্রিলের শেষ নাগাদ লাগবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, “প্রথম ধাপে হয়ত আমরা গিয়ারড বা ক্রেনযুক্ত জাহাজ দিয়েই পণ্য উঠানামা শুরু করব। পরে ধাপে ধাপে জাহাজ ভেড়ানো যাবে, বাড়বে পণ্য ওঠানামা।”

বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব আরও বলেন, “জাহাজ ভেড়ানোর জন্য জেটি অনেক আগেই প্রস্তুত। ইয়ার্ড প্রস্তুত। কাস্টমসকে আগেই অবহিত করা হয়েছে লোকবল নিয়োগের জন্য। আর বন্দরের নির্ধারিত ট্যারিফ মেনেই পণ্য ওঠানামা হবে।”

কী বলছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, সময় এসেছে বিদেশি অপারেটদের সঙ্গে দেশি অপারেটরদের পণ্য ওঠানামা তুলনা করার। পিসিটি চালু হলে সেই তুলনা করা যাবে। এতে জানা যাবে দেশি অপারেটরদের দক্ষতা কতটা।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “পণ্য খালাসে সময় ও অর্থ কতটা সাশ্রয় হচ্ছে এই দুটি বিষয় আমরা নজরে রাখব। কারণ বিদেশি অপারেটর চালুর একটাই লক্ষ্য– বন্দর সেবাকে আর্ন্তজাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করা। সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে আমরা আর্ন্তজাতিক রপ্তানি পণ্য বাজারেও এগিয়ে থাকব।”

‘রেড সি গেইটওয়ে’ সম্পর্কে যা জানা গেল

‘রেড সি গেইটওয়ে টার্মিনাল’ (আরএসজিটি) সৌদি আরবের জেদ্দা ইসলামিক পোর্টের বৃহত্তম টার্মিনাল অপারেটর। প্রতিষ্ঠানটি টার্মিনাল পরিচালনার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্দর সম্প্রসারণ ও নির্মাণ পরিচালনা করে। জেদ্দা পোর্ট বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরের তালিকায় ৪১তম।

বাংলাদেশে বন্দর পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান ‘রেড সি গেইটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল’ (আরএসজিটিআই) নিবন্ধন করেছে। নতুন এই প্রতিষ্ঠানের শতভাগ মালিকানা সৌদি সরকারের। আর মূল প্রতিষ্ঠানে চীনের কসকো কোম্পানির মালিকানা আছে ৩৫ শতাংশ। সেই প্রতিষ্ঠানের সাথেই বন্দরের চুক্তি হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা নিয়োগে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই যোগ্যতায় বাংলাদেশির স্থান মেলেনি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা দেশের বাইরে থেকে আসবে। তবে এর পরের অন্তত পাঁচ কর্মকর্তা নিয়োগের খবর মিলেছে। এছাড়া হেড অপারেশনে যোগ দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের এক কর্মকর্তা। তাদের কেউই উদ্বৃত হয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

তবে পোর্ট অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে নিশ্চিত করেছেন, “৪৬ কন্টেইনার যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে বন্দরে পৌঁছেছে। সেগুলো ছাড় নিয়ে পিসিটির অপারেশনে যুক্ত করতে ঈদ পর্যন্ত সময় লাগবে। ঈদের পর অর্থ্যাৎ মধ্য এপ্রিলে পিসিটিতে গিয়ারড জাহাজ দিয়ে পণ্য ওঠানামা শুরু হবে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত