Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

বিতর্কের মুখে ভোটের মাঠ ছাড়লেন পলকের শ্যালক

লুৎফুল হাবীব রুবেল।
লুৎফুল হাবীব রুবেল।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠার পর ইসির চাপ, দলের চাপে নতি স্বীকার করলেন লুৎফুল হাবীব রুবেল। তিনি জানিয়ে দিলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আর প্রার্থী থাকছেন না।

রবিবার সকালে সাংবাদিকদের পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ভগ্নিপতি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশেই তিনি ভোটের মাঠ ছেড়ে দিয়েছেন।

এর আগে শনিবার নাটোরের সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

তারও আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়ে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিল।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামী ৮ মে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন রুবেল।

প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য পলকের শ্যালক রুবেল সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। তিনি সিংড়ার ৮ নম্বর শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন।

উপজেলা নির্বাচনের তফসিল হওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়ের আগের দিন পর্যন্ত তিনি একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দেখা দিয়েছিল।

কিন্তু গত ১৫ এপ্রিল চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে যান স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক নেতা দেলোয়ার হোসেন। সেদিন দেলোয়ার ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। আর সেই ঘটনার জন্য রুবেলের দিকে ওঠে অভিযোগের আঙুল।

স্থানীয় প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও অপহরণকাণ্ডের প্রাথমিক সভ্যতা পাওয়ায় ইসি তাকে তলব করে।

এদিকে ১৯ এপ্রিল সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস এক চিঠিতে রুবেলকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়।

এনিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং ব্যাপক আলোচবনার মধ্যে রবিবার ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে রুবেল বলেন, “আমি ২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০০৫ সালে গোল-ই আফরোজ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ইউনিয়ন পরিষদেও পরপর তিনবার নির্বাচিত হই। গত ৩ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করি। আর গত ৮ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র সাবমিট করি।

“তারপর থেকে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন মহল সক্রিয় আছে।”

রুবেলকে নিয়ে সমালোচনা ওঠার পর পলক সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনায় তিনি বিব্রত এবং লজ্জিত।

ভগ্নিপতির নির্দেশেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে রুবেল বলেন, “উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে কোনও মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন নির্বাচন করতে পারবে না।

“তারই আলোকে এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্রটি উইথড্র (প্রত্যাহার) করে নিচ্ছি। অফিসিয়াল যে প্রসেস রয়েছে, সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করব।”

রুবেল ভোটের মাঠ ছেড়ে দিলে কী হবে- জানতে চাইলে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, রুবেলের ভিডিও বার্তার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এখনও রুবেল বা তার কোনও বৈধ প্রতিনিধি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সিংড়ায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ সোমবার। ফলে আনুষ্ঠানিকতা সারার জন্য রুবেলের হাতে আরও একদিন সময় রয়েছে।

রুবেলের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত