Beta
বুধবার, ৮ মে, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

যেখানে অনন্য তামিম ইকবাল

মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ট্রফির মঞ্চে যাচ্ছেন তামিম ইকবাল। শুক্রবার মিরপুর স্টেডিয়ামে। ছবি: শিহাব উদ্দিন।
মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ট্রফির মঞ্চে যাচ্ছেন তামিম ইকবাল। শুক্রবার মিরপুর স্টেডিয়ামে। ছবি: শিহাব উদ্দিন।

ম্যাচ শেষে হঠাৎ করেই নিভে গেল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট। আতশবাজির আলোয় আলোকিত হয়ে গেল পুরো মিরপুর এলাকা। ততক্ষণে ফরচুন বরিশালের সতীর্থদের সঙ্গে সারা মাঠে ল্যাপ অব অনার দিতে ব্যস্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল।  

সারা মাঠ ঘোরা শেষ করে ড্রেসিংরুমের সামনে যেতেই তামিম ইকবালের কোলে উঠে বসলেন মেয়ে আলিশবা ইকবাল খান। মেয়েকে নিয়েই মাঠের মধ্যে ঘুরতে লাগলেন তামিম।

যেন অসাধারণ স্বপ্নের মতো একটা টুর্নামেন্ট কাটল দেশ সেরা ওপেনারের। দলকে তো চ্যাম্পিয়ন করাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত রেকর্ডেরও একটা হিসাব মিলিয়ে ফেলেছেন। চলতি আসরের সেরা রান সংগ্রাহক হওয়ার পাশাপাশি বিপিএলের এক মৌসুমে নিজের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও ভেঙেছেন তামিম।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনাল ছিল চলতি আসরে তামিমের ১৫তম ম্যাচ। রান তাড়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বরিশালের জয়ের সমীকরণ অনেকটাই সহজ করে দিয়ে গেছেন তিনি। ২৬ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় তিনি করেন ৩৯ রান। মঈন আলির বলে আউট হওয়ার আগেই আসরের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের টুপিটা নিজের মাথায় পরে নেন।

এর আগে কুমিল্লার ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। কখনও হৃদয় এগিয়েছেন তো কখনও তামিম। শেষ পর্যন্ত জিতলেন বরিশালের অধিনায়ক। ১৫ ম্যাচে ৩৫.১৪ গড় এবং ১২৭.১৩ স্ট্রাইকরেটে তামিম করেছেন ৪৯২ রান। হৃদয় এক ম্যাচ কম খেলে ৩৮.৫০ গড় এবং ১৪৯.৫১ স্ট্রাইকরেট নিয়ে করেছেন ৪৬২ রান।

পাশপাশি বিপিএলের এক আসরে নিজের করা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও শুক্রবার টপকে গেছেন তামিম। ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম ভাইকিংসের হয়ে তিনি করেছিলেন ৪৭৬ রান। এরপর ২০১৯ বিপিএলে কুমিল্লার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার টুর্নামেন্টে করেছিলেন ৪৬৭ রান। এক মৌসুমে বিপিএলে দেশীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ রানে তামিমের এ দুটি স্কোর রয়েছে ৩ ও ৪ নম্বরে। এবার তিনি সেই দুটি স্কোরও টপকে গেছেন। সবমিলিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে এক আসরে তার রান তৃতীয় অবস্থানে।

সমর্থকদের ভিড়ে ট্রফি হাতে তামিম। ছবি : সংগৃহিত

২০১২ সালে শুরু হওয়া বিপিএলের প্রথম আসর থেকেই নিয়মিত খেলেছেন তামিম। ১০ আসরে আটটি ভিন্ন ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা তার হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে বিপিএলে দুই সেঞ্চুরির কীর্তিও তিনি গড়ে ফেলেছেন। একবার সেঞ্চুরি করেছেন ফাইনালের মঞ্চে। ২০১৯ বিপিএলের ফাইনালে তার ১৪১ রানের ইনিংস এখনও বিপিএলে স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তবে দেশীয়দের মধ্যে সেরা রানসংগ্রহে এখনও শীর্ষে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবার অফ ফর্মে কাটানো বাঁ-হাতি এই ওপেনার বিপিএলের নবম আসরে ৫১৬ রান করেছিলেন।

একজন প্রকৃত অধিনায়কের মতো সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম। কিন্তু নিজের এমন কীর্তির জন্য সব কৃতিত্ব দিতে চাইলেন সতীর্থ দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদকে।

ম্যাচ শেষে তামিম বলছিলেন, “এই ধরনের টুর্নামেন্টে অনেক চাপ থাকে। এজন্য আমি মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে ধন্যবাদ দিব। ওরা আমার কাছ থেকে চাপের অনেক কিছু নিয়ে নিয়েছে। যে কারণে আমি ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে পেরেছি। এটা আমার নিজের জন্য যত জরুরী ছিল ততটা প্রয়োজনীয় ছিল দলের জন্যও।” তিনি যোগ করেন, “যে কারণে আমি সবচেয়ে বেশি রান করতে পেরেছি। আমি এই কীর্তি গড়তে পেরেছি। কিন্তু এটা কোনও ভাবেই সম্ভব হতো না যদি মুশফিক ও রিয়াদ আমাকে সহযোগিতা না করতো।”

অভিজ্ঞতা যে দলের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় সেটাও জানালেন তামিম, “একটা সময় এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছিল যে আমরা সেমিফাইনালে উঠতে পারব কিনা সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। প্রচুর লোক টি টোয়েন্টি সম্পর্কে নানা রকম কথাবার্তা বলেছে। কিন্তু আমি মনে করি অভিজ্ঞতা হচ্ছে মূল চাবিকাঠি। আমাদের তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার দরকার ছিল। যেটা আমাদের পরিকল্পনা সফল করতে কাজে দিয়েছে এবং যে কারণে আমরা আজ এই চ্যাম্পিয়নের মঞ্চে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত