Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকে কি উপজেলা ভোট করতে পারবেন

মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

বর্তমান আইন বলছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের আগে পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু দুই প্রার্থীর আবেদনে উচ্চ আদালতের আদেশ এই বিধানকে ফেলে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে।

ইউপি চেয়ারম্যানের পদ রেখে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে সিলেট ও কুষ্টিয়ার দুজন উপজেলা পরিষদে চেয়ার‌ম্যান প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা তা বাতিল করে দেন।

মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তারা হাইকোর্টে গেলে মঙ্গলবার আদালত রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ স্থগিত করে দেন।

এর ফলে তারা ইউপি চেয়ারম্যানের পদ না ছেড়েই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন বলে তাদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

এই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর একজন হলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

আরেকজন হলেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওহিদুল ইসলাম। তিনি খোকসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহদীন মালিক ও এম মনজুর আলম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার।

আদালতের আদেশের পর শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, “ইউপি চেয়ারম্যানরা পদত্যাগ করতে বাধ্য নন। আদালত আদেশ দিলেন, তারা ইউপি চেয়ারম্যান পদে থেকে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। তাদের মনোনয়ন হাইকোর্ট বৈধ ঘোষণা করেছেন।”

ফখরুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, মনোনয়নপত্র যাছাই-বাছাইকালে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ না করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি আপিল করলে ইসির আপিল কর্তৃপক্ষও মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। তখন তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে। 

এখন প্রশ্ন উঠেছে, আদালতের এই আদেশ কি শুধু ওই দুজনের জন্য, না কি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

আদালতের এই আদেশ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে মনে করছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহদীন মালিক।

তবে হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিতে আপিল বিভাগে যাওয়ার সুযোগ ইসির রয়েছে।

আপিলে যাবেন কি না- জানতে চাইলে ইসির পক্ষের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আদেশের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে, কমিশন থেকে আপিলের সিদ্ধান্ত জানালে আমরা আপিল দায়ের করব।”

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি। কোর্টের আদেশ এখনও পাইনি। আদেশ পাওয়ার পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে আপিল করবে কি না? কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেয় সে অনুযায়ী হবে।”

আদালতের আদেশ মানতে ইসি বাধ্য। তবে যারা আদালতের আদেশ নিয়ে হাজির হবেন, তাদের ইসি প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফখরুলের বিষয়ে সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আদালতের নির্দেশনা দেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব আমরা।”

কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে কী হবে?

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক দেবনাথ বলেন, এখন পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের পদে থেকে উপজেলা পরিষদে ভোট করার কোনও সুযোগ নেই।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদে নির্বাচন কয়েক ধাপে হচ্ছে। আগামী ৮ মে প্রথম দফায় ভোট হবে। সেই নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে।

প্রথম ধাপে ১৪৮ উপজেলার পর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৫৯ উপজেলায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায়, ৫ জুন চতুর্থ ও শেষ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে।

দ্বিতীয় থেকে পরবর্তী ধাপগুলোতে এখনও মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ থাকায় ইউপি চেয়ারম্যানদের পদে থেকে ভোট করার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত