Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

গুকেশের মাঝে সম্ভাবনা দেখেছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব

গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব ও ডম্মুরাজ গুকেশ। ছবি: সংগৃহীত।
গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব ও ডম্মুরাজ গুকেশ। ছবি: সংগৃহীত।

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই দাবার বিশ্বে তোলপাড় তুলে ফেলেছেন ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার ডম্মারাজু গুকেশ। কনিষ্ঠতম দাবাড়ু হিসেবে সোমবার জিতেছেন ক্যান্ডিডেটস দাবার শিরোপা।

মাত্র ১২ বছর ৭ মাস ১৭ দিন বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন গুকেশ। বর্তমানে তিনি বিশ্বের তৃতীয় কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টার।

গুকেশ এক সময় খেলে গেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ দাবায়। ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিমানের হয়ে খেলেন তিনি। এছাড়া ২০২০ সালে করোনার মধ্যে জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবায় অংশ নিয়েছিলেন।

ডি গুকেশ ২০২১ সালে খেলেছিলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ দাবায়। বাংলাদেশ বিমানের হয়ে দাবার চালে মগ্ন তিনি। ছবি: সংগৃহীত।

গুকেশকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশের গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। ওই সময় তিনি ছিলেন বিমানে গুকেশের সতীর্থ।

অল্প বয়সেই দাবায় বিরল কীর্তি গড়েছেন গুকেশ। তার মধ্যে অনেক আগেই এমন সম্ভাবনা দেখেছিলেন রাজীব। সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, “আমাকে প্রায়ই প্রিমিয়ার ডিভিশন দাবা লিগে দল গড়ার জন্য বিদেশি খেলোয়াড় আনতে সাহায্য করতে হয়। ২০২১ সালে যখন বাংলাদেশ বিমানের জন্য দাবাড়ু দেখছিলাম তখন কম বয়সে জিএম হওয়া গুকেশ আমার নজরে আসে। কম বয়সে অনেকেই জিএম হয় এখন কিন্তু সবার পোটেনশিয়াল এক রকম হয় না। আমি গুকেশের খেলা দেখি তখন ডাটাবেজ থেকে এবং অবাক হই যে ওর রেজাল্টের থেকে (তখন পর্যন্ত) খেলার মান অনেক ভালো। আমি তখন সিদ্ধান্ত নেই ওকে বাংলাদেশের লিগে আনার জন্য।”

সেবার ভারতের আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার সূর্যশেখর গাঙ্গুলীকে হারিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন গুকেশ। সেই স্মৃতিচারণা করে রাজীব বলেন, “যদিও অনেকে তখন এত কম বয়সী খেলোয়াড়কে লিগের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় আনার ব্যাপারে অতোটা উৎসাহী ছিল না। সে বছর গুকেশ লিগে এক নাম্বার বোর্ডে বেস্ট রেজাল্ট করে এবং আমার বন্ধু সূর্য শেখর গাঙ্গুলীর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কেও হারিয়ে দেয়।”

ভারতে একই সময়ে বেড়ে উঠেছেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার রমেশবাবু প্রজ্ঞানান্দ। যিনি মাত্র ১০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক মাস্টারের খেতাব পেয়েছিলেন। এরপর ১২ বছর বয়সে হয়েছিলেন ভারতের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার।

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই দাবার বিশ্বে তোলপাড় তুলে ফেলেছেন ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার ডম্মারাজু গুকেশ। ছবি: সংগৃহীত।

ভারতীয় গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে বেশি মাতামাতি হওয়ায় বেশ অবাকই হন রাজীব, “ আমি অবাক হতাম যখন দেখতাম যে প্রজ্ঞানন্দকে নিয়ে ভারতে যত মাতামাতি হয় গুকেশকে নিয়ে তার ছিটেফোঁটাও নেই। যদিও দুজনেই অনেক শক্তিশালী খেলোয়াড়। এই মাতামাতিটা আরও বেড়ে যায় যখন বিশ্বকাপে গুকেশ কোয়ার্টার ফাইনালে বাদ পড়ে আর প্রজ্ঞানন্দ ফাইনাল খেলে এবং ক্যান্ডিডেটসে কোয়ালিফাই করে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল দুজনে বিশ্বকাপে হেরেছেন সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের কাছে।”

রাজীব যোগ করেন, “ প্রজ্ঞানন্দ যদি কোয়ার্টার ফাইনালে কার্লসেনের সঙ্গে খেলত তাহলে রেজাল্ট সম্পূর্ণ ভিন্নও হতে পারতো। আমার মতে বর্তমানে ভারতে তিনজন দাবাড়ু আছে যারা এখন বা পরবর্তীতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করতে পারবে- গুকেশ, প্রজ্ঞানন্দ ও এরিগাইসি।”

এত বড় অর্জনের জন্য গুকেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজীব, “গুকেশকে অভিনন্দন ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্ট জেতার জন্য। এটা খুবই কঠিন একটা কাজ। এই কঠিন কাজই পরপর দুবার করেছিলেন নেপমনিয়াচি এবং এবারেও শেষ রাউন্ড পর্যন্ত সম্ভাবনা ধরে রেখেছিলেন। এরকম পারফরম্যান্স অকল্পনীয়।”

পুরো টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে রাজীবের মনে হয়েছে, “ হিকারু নাকামুরা অনেক ভালো খেলেছেন এবং কোয়ালিফাই করার খুব ভালো সম্ভবনা ছিল যদি না ভিদিতের কাছে দুটো অদ্ভূত গেম না হারত। কার্লসেনের পরে কারুয়ানাই বোধ হয় সব থেকে শক্তিশালী দাবাড়ু এই মুহূর্তে। আমি মনে করি কারুয়ানার নার্ভ যদি আরেকটু শক্ত হতো তাহলে কারুয়ানা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো খেলোয়াড়।”

করোনার সময় দাবা লিগ শেষ হওয়ায় গুকেশের সঙ্গে একটা অদ্ভূত ঘটনা ঘটে ঢাকায়। সেই বর্ণনা দিয়ে রাজীব জানান, “তখন ওর বাবা এসেছিল ওর সঙ্গে ঢাকায়। কিন্তু করোনা পজিটিভি হওয়ায় বিমানে যেতে পারেনি দুজন এক সঙ্গে। ওই টুকু ছেলে একা ভারতে ফেরে। এর এক সপ্তাহ পরে ফেরেন গুকেশের বাবা।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত